বাংলাহান্ট ডেস্ক: রানু মণ্ডল (Ranu Mondal), সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল মুখগুলির মধ্যে অন্যতম। ‘এক পেয়ার কা নগমা হ্যায়’ থেকে ‘তেরি মেরি’ পর্যন্ত তাঁর সফর দেখেছে আমজনতা। দেখে অবাক হয়েছে। রানাঘাট স্টেশনে হতদরিদ্র অবস্থায় বসে যে মহিলা লতা মঙ্গেশকরের গান গাইতেন, মুম্বইয়ে হিমেশ রেশমিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকেই ‘তেরি মেরি’ গাইতে দেখে চমক লেগেছিল বইকি!
রানুর উত্থান হয়েছিল ঝড়ের গতিতে। রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়া স্টার হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ২০১৯ এর দূর্গাপুজোয় সর্বত্র বেজেছিল রানুর কণ্ঠে ‘তেরি মেরি কাহানি’। কিন্তু উত্থান যে গতিতে হয়েছিল পতনও ততটাই দ্রুত হয় রানুর। সাংবাদিক, অনুরাগীদের সঙ্গে দূর্ব্যবহার, অতিরিক্ত তারকা সুলভ হাবভাব মেনে নিতে পারেননি অনেকেই।
রাতারাতি তারকা হয়েছিলেন রানু, তেমনি রাতারাতি সমস্ত খ্যাতি খুইয়ে ফের রানাঘাটেই ফিরে আসেন তিনি। এখন একটি জরাজীর্ণ বাড়িই তাঁর বাসস্থান। ইউটিউবাররা অবশ্য প্রায়দিনই এসে হানা দেয় তাঁর বাড়িতে। গান গেয়ে, বিতর্কিত মন্তব্য করে এখনো সংবাদ শিরোনামে আসেন রানু মণ্ডল।
সম্প্রতি তিনি কলকাতায় এসেছিলেন গান রেকর্ড করতে। নিজের বায়োপিক ‘মিস রানু মারিয়া’তে দুটি গান গাইবেন তিনি। সিধু ও সন্দীপ করের সঙ্গীত পরিচালনায় গানদুটি রেকর্ড করার জন্য দক্ষিণ কলকাতার এক স্টুডিওতে আনা হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন রানু।
অচেনা জায়গায় বেশ অপ্রস্তুত হতে দেখা গেল তাঁকে। প্রথমে ঢুকতেই চাইছিলেন না স্টুডিওতে। পরে অবশ্য অস্বস্তি কাটিয়ে গান রেকর্ড করেন তিনি। ভাইরাল না হলেই কী ভাল হত? সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নে রানু জানান, ভাইরাল না হলেও অনেকে বিরক্ত করত তাঁকে। আর ভাইরাল হওয়ার পর তো বাইরে বেরোনো পর্যন্ত দুষ্কর হয়ে ওঠে। তবে আশপাশের প্রতিবেশীরা এসে দেখা করে যেতেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিলেন মুম্বই। প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল অনেক। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেসব কিছুই হয়নি।
রানু জানান, মুম্বই থেকে ফেরার পর মাসে কখনো চার হাজার কখনো পাঁচ হাজার টাকা পেতেন। তারপর সেটাও বন্ধ হয়ে গেলে নিজেই গান গাইতেন, বাড়িতে ইউটিউবাররা আসে, তারা খাবার নিয়ে আসে। কেউ বিস্কুট, কেক, অনেক সময় বিরিয়ানিও আনে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই খাওয়া যায় না সেটা। ফেলে দিতে হয় ডাস্টবিনে।
রানুর অভিযোগ, ক্যামেরায় দেখানোর জন্যই বিরিয়ানি নিয়ে আসে ইউটিউবাররা। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই সেটা পচা বেরোয়, খাওয়া যায় না। যে খাবারটা ভাল হয় সেটা খান। বাকিটা ফেলে দেন। তাঁর বায়োপিক হচ্ছে শুনে খুশি রানু। এবার যদি তাঁর পরিস্থিতির একটু উন্নতি হয়, আশা শুভাকাঙ্খীদের।