বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রথযাত্রা বা রথদ্বিতীয়া একটি আষাঢ় মাসে আয়োজিত অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। রাজ্য ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে এই উৎসব বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়। দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের স্মরণে এই উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। ভারতের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ রথযাত্রা ওড়িশার পুরী শহরের জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল, শ্রীরামপুর শহরের মাহেশের রথযাত্রা, গুপ্তিপাড়ার বৃন্দাবনচন্দ্র মঠের রথ এবং কলকাতা ও বাংলাদেশের ইসকনের রথ ধামরাই জগন্নাথ রথ বিশেষ প্রসিদ্ধ। রথযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে রথযাত্রার সময় যাত্রাপালা মঞ্চস্থের রীতি বেশ জনপ্রিয়।
আর গতকাল গোটা দেশজুড়ে পালিত হল শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। গতকাল ছিল উলটো রথ। এক সপ্তাহ মাসির বাড়ি থেকে শেষে নিজের বাড়িতে গেলেন জগতের নাথ। গতকালের এই রথযাত্রা নিয়ে গোটা দেশ সমেত পশ্চিমবঙ্গেও ছিল চরম উদ্দীপনা। রাজ্যের বিভিন্ন যায়গায় সারম্বরে পালিত হয়েছে রথযাত্রা। কিন্তু গতকাল এক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর রাজ্যের শাসক দলের মনভাবনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ISKCON) দ্বারা গতকাল পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রীগ্রামে কাল এক বিশাল রথযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতি বছরের মোট এবছরেও এই রথযাত্রা নিয়ে মানুষের মধ্যে ছিল চরম উদ্দীপনা। কিন্তু রাজ্যের শাসক দলের এক অমানবিক কাজে সেই উদ্দীপনায় ভাটা পড়ে।
ISKCON এর শাখা দ্বারা আয়োজিত এই রথযাত্রার প্রচার প্রতি বছরই এলাকা জুড়ে করা হয়। এবছরেও গোটা এলাকায় পোস্টার ব্যানার লাগিয়ে রথযাত্রার শুভেচ্ছা এবং সবাইকে রথের দড়ি টানানোর জন্য আহ্বান করা হয়। কিন্তু শাসক দলের রাজনৈতিক প্রচারের জন্য রথযাত্রার শুভেচ্ছা পোস্টার ঢেকে যায়।
এমাসের ২১ শে জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় ‘শহীদ” দিবস পালন করতে চলেছে শাসক দল তৃণমূল। আর সেই অনুষ্ঠানে লোক টানার জন্য দলীয় কর্মীরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। আর সেই মতে ধাত্রীগ্রামেও চলছে জোরদার প্রচার। আর সেই প্রচার করতে গিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় মনোভাবে চরম আঘাত হানল শাসক দল। এই ঘটনার পর এলাকার মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা যায়। কিন্তু শাসক দলের পোস্টার থাকার জন্যই, তাঁরা কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে জানা যায়।
রথযাত্রার পোস্টারের উপর নিজদের পোস্টার লাগিয়ে শাসক দলের কর্মীরা প্রমাণ করে দিলো যে, তাঁদের কাছে হিন্দুদের ধর্মীয় মনোভাব গুরুত্ব দেয়না। এখন চারিদিকে প্রশ্ন উঠছে এটাই, যে শাসক দল তৃণমূল কি এরকম কাজ সংখ্যালঘুদের কোন ধর্মীয় প্রচারে করতে পারত? একদিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি যখন বারবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলছে। তখন আরেকদিকে তৃণমূলের এই কাজ কতটা গ্রহণ যোগ্য?