রেশন দুর্নীতিতে নয়া মোড়! মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ীর বিশাল সম্পত্তির হদিস! অঙ্ক জেনে ভিরমি খাচ্ছে ED

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) কাণ্ডে নয়া মোড়। নিয়োগ দুর্নীতি, পুর নিয়োগ দুর্নীতির পর বিগত কিছুদিন রেশনে দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্যে। সম্প্রতি মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ বাকিবুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। বর্তমানে ইডি হেফাজতে বাকিবুর। আর এরই মধ্যে বিস্ফোরক তথ্য ইডির হাতে।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি সূত্রে দাবি, ধৃত বাকিবুর ও তার আত্মীয়ের নামে ৯৫টি সম্পত্তির হদিস পেয়েছেন তারা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। রেশন দুর্নীতিতে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির খোঁজ পেতেই নড়েচড়ে বসেছে ইডি।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বাকিবুরের ১ হাজার ৬৩২ কাঠা জমির খোঁজ মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনা ও বহরমপুরের বিভিন্ন জায়গায় এই সব জমির অধিকাংশ রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার। হদিস মিলেছে একাধিক ফ্ল্যাটেরও। ইডি সূত্রে খবর, পার্ক স্ট্রিট, রাজারহাট, বারাসাত ও রঘুনাথপুর মিলিয়ে মোট ৯টি ফ্ল্যাট রয়েছে ধৃত ব্যবসায়ীর।

আরও পড়ুন: সেরার সেরা তকমা! এ বছর রাজ্যপালের দেওয়া দুর্গারত্ন পুরস্কার ছিনিয়ে নিল এই ৪ ক্লাব

প্রসঙ্গত সম্প্রতি রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যের একাধিক জেলায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। নদিয়ার শিমুলিয়ায় বাকিবুর রহমানের (Bakibur Rahaman) চালকলে হানা দিয়েছিল ইডি। তার রাজারহাট ফ্ল্যাটে পৌঁছে যান আধিকারিকরা। কৈখালির আবাসনে হানা দেয় ইডি। চলে চিরুনি তল্লাশি। টানা ৫৩ ঘণ্টা অভিযানের পর ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।

ed

নদিয়া জেলার কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার ভিত্তিতে ২০২২ সালে ইডি একটি মামলা রুজু করে বাকিবুরের বিরুদ্ধে। কেন্দ্র সরকারের দেওয়া রেশনের আটা চুরি করার পাশাপাশি নিম্নমানের আটা সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে বাকিবুরের বিরুদ্ধে। তারপরই শুরু হয় তদন্ত।

পূর্বে বাকিবুরের চালকল ও আটাকলে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর সরকারি স্ট্যাম্প ও সিল মিলেছে বলে ইডি সূত্রে খবর। চালকলের পাশাপাশি হোটেল ব্যবসায়ী বাকিবুর এলাকায় বিশাল প্রভাবশালী বলেই পরিচিত। বাকিবুরের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ নথি উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। মিলেছে পাহাড়প্রমাণ সম্পত্তির খোঁজ। যদিও সম্পত্তির উৎস, হিসাব তিনি দিতে পারেননি।

জানা গিয়েছে ২০১৬ সাল থেকে ফুলেফেঁপে ওঠে বাকিবুর। কলকাতায় একাধিক রেস্তরাঁ, পানশালা ও হোটেলের মালিক এই বাকিবুর রহমান। নার্সিংহোম, শপিংমলেও বাকিবুরের অর্থ রয়েছে বলে দাবি ইডির। এর আগে ২০২০ সাল ও ২০২১ সালে বাকিবুরের সংস্থার উপর দায়ের হওয়া দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে তল্লাশি অভিযান চালায় রাজ্য পুলিশ। প্রচুর পরিমাণে আটা উদ্ধার হয়। এরপর ২০২২ সালে বাকিবুরের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার আয়কর ফাঁকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে।

বাকিবুরের সাথে উঠে এসেছে প্রভাবশালী যোগ। সেই নিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। আবার বাকিবুরের গ্রেফতারির পর রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিযুক্ত প্রসঙ্গে বলেছিলেন, বাকিবুরকে চিনিনা, কোনওদিন দেখিনি। এবার এই আবহেই এত পরিমাণ সম্পত্তির হদিস মেলায় মাথায় হাত ইডির। পরবর্তীতে তদন্তে আর কী কী উঠে আসে সেটাই দেখার।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর