‘কেন গ্রেফতার করবেন?’ এবার আদালতের তোপের মুখে ED! ঘুরে গেল রেশন দুর্নীতির মোড়?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ থেকে রেশন (Ration Scam), রাজ্যের একাধিক দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে নানান কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ‘হাইপ্রোফাইল’ এই সকল মামলায় নাম জড়িয়েছে একাধিক হেভিওয়েটের। রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে যেমন গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) সহ বেশ কয়েকজন। এবার এই মামলাতেই আদালতের তোপের মুখে পড়ল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) তথা ইডি।

রেশন দুর্নীতি মামলায় কেন আদালতে ভর্ৎসিত ইডি (Enforcement Directorate)?

জানা যাচ্ছে, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কলকাতার বিচারভবনের বিশেষ সিবিআই আদালত। শনিবার বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শান্তনু ভট্টাচার্য, চালকল মালিক হিতেশ চন্দক, সুব্রত ঘোষ সহ মোট ৪ জনের জামিন মামলার শুনানি ছিল। তাতেই আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারকের পর্যবেক্ষণ, রেশন দুর্নীতি মামলায় সাক্ষীকে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। এদিন ইডির আইনজীবী, শান্তনু সহ ৪ জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আর্জি জানিয়েছিল। পাল্টা শান্তনুর আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, ২০২৩ সাল থেকে এই মামলার তদন্ত চলছে। কবে এই মামলা শেষ হবে তার ঠিক নেই।

আরও পড়ুনঃ রেশন গ্রাহকদের পোয়া বারো! জানুয়ারিতে মিলবে অতিরিক্ত সামগ্রী! কোন কার্ডে কত দেখুন

জানা যাচ্ছে, শান্তনু বলেন, আমি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। সামাজিক সম্মান রয়েছে। এই মামলার সঙ্গে আমরা কোনও সংযোগ নেই। তবু আমি তদন্তের স্বার্থে ২৮বার হাজিরা দিয়েছি। এই ট্রায়াল তাড়াতাড়ি শেষ করার আবেদন জানাচ্ছি। শান্তনুর আরেকজন আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত বলেন, ‘এতদিনে একবারও দেখানো হয়েছে যে আমার মক্কেল বেনিফিশিয়ারি! কাকে ও কত টাকা দেবেন, সেটা ওনারা (ইডি) কীভাবে বলে দিতে পারেন?’ এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, ‘ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে আমাদের থেকে টাকা ইডির হাতে গিয়েছে’।

একথা শোনার পরেই বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘৩টি সংস্থার টাকা যে উনি ফেরত দিচ্ছেন, সেটা কি আপনাদের নির্দেশে? এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কি ওই সংস্থাগুলির মালিক’। উত্তরে কেন্দ্রীয় এজেন্সির (ED) আইনজীবী জানান, এগুলি সরকারি সংস্থা। একথা শোনার পর বিচারক পাল্টা জানতে চান, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট কেন ডিমান্ড ড্রাফটে টাকা ফেরত দিচ্ছেন? কোন আইনের ভিত্তিতে এমনটা হয়েছে? আইও-কে প্রশ্ন করেন বিচারক।

Enforcement Directorate

তিনি বলেন, ‘কীভাবে গ্রেফতার করা হবে, কখন করা হবে, তদন্ত কীভাবে হবে, সব পিএমএলএ অ্যাক্টে লেখা রয়েছে। তাহলে এটা কোন আইনের ভিত্তিতে হল?’ উত্তরে তদন্তকারী অফিসার শুধু বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তার নির্দেশ মতো তিনি কাজ করেছেন।

এখানেই না থেমে বিচারক এদিন আরও বলেন, ‘হয়তো উনি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে নিজের প্রফেশনাল যা দায়িত্ব, সেই অনুযায়ী নিজের কাজ করেছেন। আপনি তাঁকে জেরা করতে পারেন, কেন গ্রেফতার করবেন?’ ইডির (Enforcement Directorate) তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি এই মামলায় ধৃতদের হেফাজতে চাওয়া নিয়েও বিচারক প্রশ্ন তোলেন বলে খবর। আপাতত এই মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর