বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতির পর বর্তমানে রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। গত অক্টোবর মাসে রেশন দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিক। গ্রেফতার হয়েছেন আরও অনেকেই। বর্তমানে দুর্নীতির গোড়ায় পৌঁছতে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আর তারপর থেকেই চাপে পড়ে দুর্নীতি ঠেকাতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকারও (West Bengal Government)।
এর আগে বহুবার রাজ্যে ভুয়ো রেশন কার্ড নিয়ে তথ্য সামনে উঠে আসে। প্রচারিত হয় একাধিক সংবাদ মাধ্যমেও। এরপরই নড়েচড়ে বসে রাজ্য। প্রায় বছরখানেক আগেই ভুয়ো কার্ড চিহ্নিত করার পক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধার লিঙ্ক করার পদ্ধতিকে মান্যতা দিয়ে বিপুল সংখ্যক ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। প্রতিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় দু’কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড (Ration Scam) বাতিল করেছে রাজ্য।
আর এবার আরও বড় পদক্ষেপ। রেশন দুর্নীতির তদন্তের মাঝেই ভুয়ো রেশন কার্ড সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির কাছে পেশ করল রাজ্য সরকার। কিছুদিন আগেই ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ অবধি কতগুলি রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে সেই তথ্য রাজ্যের কাছে চেয়েছিল ইডি (ED)।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ED -র দফতরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ গত কয়েক বছরে বাতিল করা রেশন কার্ডের বিবরণ জমা দিয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশন বন্টন দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রচুর পরিমাণে ভুয়ো রেশন কার্ডের তথ্য তাদের হাতে এসেছে।
কোনো একটি বা দু’টি নির্দিষ্ট জেলা নয়, রাজ্যের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায় ভুয়ো রেশন কার্ডের চক্রের মাধ্যমে রেশন বন্টন দুর্নীতির (Ration Scam) জাল ছড়িয়ে রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। আগেই রাজ্যের কাছে চিঠি দিয়ে ইডি জানতে চেয়েছিল, মৃত্যুর পরে কোনও ব্যক্তির রেশন কার্ড নিয়ম মেনে বাতিল করা হচ্ছে, না কী সেই রেশন কার্ডের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে রেশন তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি অ্যাক্টিভ রেশন কার্ডের সংখ্যাও জানতেই চেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছে রাজ্য।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপের জেরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি! আজ কোন কোন জেলা ভিজবে? আবহাওয়ার খবর
এবার ইডির দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই পরিবারের কোনো সদস্যের মৃত্যুর পর সেই মৃত ব্যক্তির ভুয়ো রেশন কার্ড বানিয়ে রেশনের সামগ্রী পরিবারের বাকি সদস্যরা আত্মসাৎ করছেন। আবার কোনো পরিবার এক এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গেলেও তাদের নাম ও পরিচয় দিয়ে একাধিক ভুয়ো রেশন কার্ড তৈরি করা হত বলে অভিযোগ ইডির।
ইডি সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের দেওয়া একাধিক নথিগুলিতেই জানানো রয়েছে যে, জেলায় জেলায় প্রায় প্রত্যেক রেশন দোকান থেকেই ভুয়ো রেশন কার্ড শনাক্ত করা হয়েছিল। যার সংখ্যা প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। ইতিমধ্যেই ‘ভুয়ো’ রেশন কার্ড শনাক্ত করে সেগুলি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য। এবার রাজ্যের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে রেশন মামলা কোন মোড় নেয় সেটাই দেখার।