রাবণ নয়, সোনার লঙ্কা তৈরি করেছিলেন এই ব্যাক্তি! আসল সত্য জানেন না অধিকাংশ হিন্দুই

বাংলাহান্ট ডেস্ক : রামায়ণে বর্ণনা করা হয়েছে লঙ্কারাজ রাবণের লঙ্কা ছিল অত্যন্ত সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী। অনেকে লঙ্কাকে গোল্ডেন সিটি বলেও ডাকতেন। রামায়ণে রাবণকে লঙ্কাপতি হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। তবে পুরান অনুযায়ী এই তথ্য মোটেও ঠিক নয়। সবথেকে মজার কথা লঙ্কা নাকি রাবণের জন্য নয়, তৈরি করা হয়েছিল অন্য কারোর জন্য।

তাহলে লঙ্কা অধিপতি কীভাবে হলেন রাবণ? কে গড়েছিল সোনার লঙ্কা? আজকের প্রতিবেদনে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব। শিবপুরাণ অনুযায়ী রাবণ কিন্তু লঙ্কা তৈরি করেননি। স্বয়ং মহাদিদেব নির্মাণ করেছিলেন লঙ্কা। মহাদেব পার্বতীর জন্য সোনা দিয়ে নির্মাণ করেন গোটা লঙ্কা। মহাদেবের নির্দেশ পেয়ে কারিগরের দেবতা বিশ্বকর্মা ও ধনকুবের কুবের সমুদ্রের মাঝখানে ত্রিকুটাচল পর্বতে লঙ্কা নির্মাণ করেন।

প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, কৈলাস পর্বতে একবার ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর সাথে দেখা করতে এসেছিলেন দেবী লক্ষী ও ভগবান বিষ্ণু। সেখানে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হতে থাকে দেবী লক্ষ্মীর। ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি গোটা পাহাড়ে কোনও জায়গা খুঁজে পাননি। লক্ষী দেবী পার্বতীকে বলেছিলেন, আপনি তো একজন রাজকন্যা।

কৈলাস পর্বতে আপনি কীভাবে এরকম ভাবে থাকতে পারেন? এই কথা শুনে দেবী পার্বতী মহাদেবকে এমন একটি রাজপ্রাসাদ তৈরির আবেদন করেন যা কোথাও নেই। মহাদেবের নির্দেশ পেয়ে বিশ্বকর্মা ও কুবের সোনার প্রাসাদ নির্মাণ করেন সমুদ্রের মাঝে। ত্রিকুটাচল পর্বতের মাঝখানে পার্বতীর জন্য সেই ব্যক্তি প্রাসাদ তৈরি করেন যেটি গোল্ডেন সিটি বা সোনার লঙ্কা নামে পরিচিত।

এবার তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে সোনার লঙ্কার অধিপতি কীভাবে হলেন রাবণ? পুরান কাহিনী অনুযায়ী, একবার রাবণ সোনার লঙ্কার উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তিনি সোনার লঙ্কা দেখে অভিভূত হয়ে যান। লঙ্কা হস্তক্ষেপ করার জন্য ব্রাহ্মণ বেশে রাবণ পৌছান শিবের কাছে। শিবের কাছে ভিক্ষা হিসাবে চেয়ে বসেন সোনার লঙ্কা।

lanka (1)

শিব রাবণকে চিনতে পারলেও তিনি সোনার লঙ্কা রাবণের হাতে তুলে দেন। তবে অনেক হিন্দু বিশ্বাস করেন যে কুবেরের কাছ থেকে লঙ্কা রাবণ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। মহাদেব সোনার লঙ্কা রাবণকে দান করেছেন শুনে প্রচন্ডভাবে রেগে যান দেবী পার্বতী। পার্বতী অভিশাপ দেন যে সোনার লঙ্কা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। দেবীর অভিশাপের জেরে সোনার লঙ্কা হনুমান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেন।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর