বাংলার হান্ট নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে ভারত। এই ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বাঁহাতি পেসার রবি কুমার। ম্যাচে উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি অত্যন্ত কৃপণ বোলিং করেছেন তিনি। মোট ৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে তিনি মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট তুলে নেন রবি। উড়িষ্যার নকশাল অধ্যুষিত রায়গড় জেলায় অবস্থিত সিআরপিএফ ক্যাম্পেও তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের মধ্যে দিয়ে আসা সাফল্য উদযাপন করা হয়েছিল। রবির বাবা রাজিন্দর সিং এএসআই পদে কাজ করেন। তিনি রবির পারফরম্যান্সের পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গেছেন। এই ক্যাম্পেও তিনি খুব একটা পরিচিত মুখ ছিলেন না। তবে ২ দিন আগে পর্যন্ত এই শিবিরের খুব কম মানুষই রবির বাবাকে চিনত।
বাবা রাজিন্দর সিং একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “আজকে গোটা সিআরপিএফ শিবির জুড়ে শুধু আমার এবং আমার ছেলে চর্চা চলছে। গতকাল পর্যন্ত আমাকে তেমন কেউ এখানে চিনত না। আজ সবাই এসে কথা বলছে। অনেকেই আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমার আনন্দ প্রকাশ করার ভাষা নেই।”
আজ এই জায়গায় পৌঁছতে পিতা-পুত্র যুগলকে অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়েছে। তার মধ্যে কিছু হল- বাবার আয়, মায়ের উদ্বেগ এবং মানুষের ঠাট্টা। তার মা জানিয়েছেন সারাক্ষণ রবি ক্রিকেট খেলা নিয়ে মগ্ন থাকতো। তার মা চেয়েছিলেম রবি পড়ালেখায় মনোনিবেশ করুক। কিন্তু রবির ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগ ছিল এবং সে তার মাকে বলতেন যে তুমি আজ আমাকে খেলতে বাধা দিচ্ছে, একদিন তুমি আমাকে টিভিতে খেলতে দেখবে এবং রবির কথা আজ সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
রবি জীবনে ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছিল, বন্ধুদের ব্যঙ্গও শুনেছিল। কিন্তু যখনই তারা মরিয়া হয়ে উঠত, সিআরপিএফ জওয়ানরা তাদের বাবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতেন যে তারা যে কাজ করছেন তার চেয়ে কঠিন আর কিছুই নয়। রবি ভাবত বাবা রোজ বনের ভিতর যায়, না জানি তার সামনে কি হতে পারে। তারা যখন আমাদের জন্য এত ঝুঁকি নিতে পারে, আমরা কেন যুদ্ধ করতে পারব না? শুধু এই কথা মাথায় রেখে, রবি প্রতিটি অসুবিধার সাথে লড়াই চালিয়ে যান এবং প্রথমে বাংলার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে এবং পরে ভারতীয় দলে জায়গা করে নেন।