বাংলা হান্ট ডেস্ক: ২০২০ সালে RBI ভারতে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি (Central Bank Digital Currency, CBDC)-র সম্ভাবনা অধ্যয়ন করার জন্য একটি বিশেষ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। এমতাবস্থায়, গত ৭ অক্টোবর ২০২২-এ ডিজিটাল মুদ্রা (Digital Rupee) সম্পর্কে একটি নয়া পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করা হয়েছে RBI-এর তরফে। এদিকে, ইতিমধ্যেই চলতি বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে ভারত সরকার একটি CBDC চালু করার বিষয়ে ঘোষণা করেছিল। এমতাবস্থায়, RBI-এর নয়া পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ভারতে এবার ডিজিটাল মুদ্রার পাইলট লঞ্চ শুরু করতে চলেছে। উল্লেখ্য যে, ডিজিটাল মুদ্রা এখনও পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি, RBI-এর পাইলট ট্রায়ালের ফলাফলের উপর নির্ভর করেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
ডিজিটাল মুদ্রা বিষয়টি ঠিক কি: E-rupee বা ডিজিটাল মুদ্রা হল ভারতীয় মুদ্রার একটি ডিজিটাল সংস্করণ। জানা গিয়েছে, RBI এই মুদ্রার দু’টি ভার্সান জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। RBI দ্বারা প্রস্তাবিত পরোক্ষ মডেল অনুসারে, আপনি একটি ব্যাঙ্ক বা পরিষেবা প্রদানকারীর কাছে ওয়ালেট মারফত ডিজিটাল মুদ্রা জমা রাখতে পারবেন।
এটা কি ক্রিপ্টোকারেন্সি? ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্তর্নিহিত প্রযুক্তির (ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার) ডিজিটাল মুদ্রা সিস্টেমের অংশগুলিকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা থাকলেও RBI এখনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে বিটকয়েন বা ইথেরিয়ামের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি “ব্যক্তিগতভাবে” থাকে। অন্যদিকে, যে ডিজিটাল মুদ্রা জারি করা হবে তা RBI দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিটকয়েনের মত ব্যবহার হবে? মূলত, RBI এটা জারি করবে। তাই, এটি ব্যবহারিক দিক থেকে বিটকয়েনের তুলনায় কিছুটা স্বতন্ত্র হবে। তাই ডিজিটাল মুদ্রার প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
কে এটা জারি করবে? এই প্রসঙ্গে RBI-এর মডেল অনুসারে জানা গিয়েছে যে, RBI ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যু করলেও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাঙ্কগুলি এটি বিতরণ করবে।
আপনি কিভাবে এটি ট্রান্সফার করবেন? ডিজিটাল মুদ্রার খুচরো সংস্করণ হবে টোকেন ভিত্তিক। বিস্তৃতভাবে এর অর্থ হল, আপনি প্রাপকের পাবলিক কি (অনেকটা ই-মেল-এর মত) খুঁজে নিয়ে আপনার প্রাইভেট কি (মূলত, একটি পাসওয়ার্ড) ব্যবহার করে কাছে অর্থ ট্রান্সফার করতে পারবেন।
এটা কি সুদ অর্জন করবে? RBI-এর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তারা ডিজিটাল মুদ্রার সঙ্গে সুদের বিষয়টি যুক্ত করার পক্ষে নয়। কারণ এর ফলে, গ্রাহকেরা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে তা ডিজিটাল মুদ্রায় রূপান্তর করতে পারেন। এমতাবস্থায়, ব্যাঙ্কগুলি বিপদে পড়বে।
এটা কি বেনামি হবে? মূলত, বর্তমানে ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রেরক এবং প্রাপককে চিহ্নিত করা যায়। এমতাবস্থায়, RBI-এর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তারা এবার ডিজিটাল মুদ্রার লেনদেনের ক্ষেত্রে “Partial Anonymity”-র সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অর্থাৎ, এর ফলে বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট করা গেলেও ছোট লেনদেনের ক্ষেত্রে তা বেনামি হতে পারে।
এটির সুবিধা: ডিজিটাল মুদ্রায় লেনদেন করলে নগদ টাকা এবং কয়েন বহন করার অসুবিধা দূর হতে পারে। এছাড়াও, RBI সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য কিছু সুবিধাজনক পরিকল্পনা করে রেখেছে। যেমন আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, উদ্ভাবন এবং নগদ লেনদেনের খরচ কমানো।
এটা প্রোগ্রাম করা যাবে? হ্যাঁ, সম্ভবত এটি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট খাতে (যেমন কৃষি) ব্যয় নিশ্চিত করার মত উদ্দেশ্যগুলি অর্জনের জন্য প্রোগ্রাম করা যেতে পারে। বিকল্পভাবে বলতে গেলে এটি একটি ভাউচারের মত “Limited Life” পেতে পারে। যা প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করা যাবে।
নেট স্লো হলে কি হবে? RBI ডিজিটাল মুদ্রার জন্য অফলাইনেই কার্যকারিতার প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যার অর্থ হল আপনি ইন্টারনেট ছাড়াই লেনদেন করতে পারবেন। তবে এটি সম্ভব হবে তখনই যেখানে একই মুদ্রা একাধিক ব্যক্তির কাছে স্থানান্তরিত হয়। এই ধরণের সিঙ্ক্রোনাইজেশনের সমস্যাগুলি কমাতে বা কিছু প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজতে RBI এখন কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে।