বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সেই ২০২২ থেকে চর্চার শিরোনামে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam)। শিক্ষক দুর্নীতির অভিযোগে জেলে গিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ বহু তৃণমূল নেতা। জেলের কুঠুরিতেই রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বহিষ্কৃত নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। এবার এই কুন্তলকে নিয়েই মারাত্মক দাবি সামনে আসল। কুন্তলের ফোন থেকেই তৈরী হয়েছিল ভুয়ো ওয়েবসাইট, চার্জশিটে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI) এর।
সম্প্রতি আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। সেখানেই বিস্ফোরক সব দাবি করা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’র। যার এক কর্তা ও কর্মচারীও বর্তমানে জেলে রয়েছে। চার্জশিটে সিবিআই এর অভিযোগ, এই ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’-কে প্রার্থীদের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) প্রস্তুত করার দায়িত্ব দিয়েছিল শিক্ষা দফতর, আর তাদের সঙ্গে কুন্তলের আর্থিক লেনদেনের খোঁজ মিলেছে।
সিবিআই এর দাবি, কুন্তলের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে OMR শিট প্রস্তুতকারক এই সংস্থার সঙ্গে সেই আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। তদন্তকারীদের আরও দাবি, টেট অনুউত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন কুন্তল। টেট পাশদের তালিকায় সেই সব প্রার্থীদের ঢোকাতে কুন্তলের মোবাইল থেকেই তৈরী করা হয়েছিল ভুয়ো ওয়েবসাইট। কুন্তলের মত আরও অনেক মিডিলম্যানরা এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।
ভুয়ো ওয়েবসাইট করে তার রেজিস্ট্রেশনও করানো হয়। অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা ওই ওয়েবসাইটে উত্তীর্ণ হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। এই ভুয়ো ওয়েবসাইট কাজে লাগিয়েই চাকরিপ্রার্থীদের কুন্তল বোঝাতেন যে তারা চাকরিতে পাশ করেছেন। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই ওয়েবসাইটগুলি তৈরির লক্ষ্যে ছিলেন টাকা দেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা।
সিবিআই এর দাবি, টাকা দেওয়ার পরেও চাকরি না পেয়ে কুন্তলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন অযোগ্য প্রার্থীরা। এরপরই ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে দেন কুন্তল। এগুলি দেখতে ছিল হুবহু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটের মতো। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এগুলি দেখে কারও মনে সন্দেহই হওয়ার কথা ছিল না।
আরও পড়ুন: শীত ও বৃষ্টির সাঁড়াশি আক্রমণ! এই দিন থেকে তোলপাড় হবে দক্ষিণবঙ্গ: আবহাওয়ার খবর
টাকা দেওয়া প্রার্থীরা জানতে চাইতেন পর্ষদের ওয়েবসাইটে তাদের নাম উঠল কি না অথবা নম্বর বাড়ল কি না। তখন এই ওয়েবসাইটে তাদের নাম দেখিয়ে দেওয়া হত। আর এদিকে কুন্তলের পাঠানো অযোগ্য ওই সব নামের তালিকার ভিত্তিতে এস বসু রায় সংস্থার কয়েক জন কর্মচারী ওই কাজ করতেন।
সিবিআই সূত্রে খবর, এস বসু রায় সংস্থার ধৃত কর্তা কৌশিক মাজি ও প্রোগ্রামার পার্থ সেনের বিরুদ্ধে পেশ করা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের সাত নম্বর পাতায় কুন্তল ঘোষ ও এস বসু রায় সংস্থার যোগসাজশে ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।