বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহুদিন আগেই নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সংস্থা ‘লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডস’ (Leaps And Bounds) এর। এরপর এই সংস্থার সূত্র ধরে একাধিক তথ্য সামনে উঠে আসে। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। এখনও পর্যন্ত অভিষেকের ‘লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডস’ এর কত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে, বুধবার সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে জমা করল ইডি।
আগেই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের স্বার্থে অভিষেকের সংস্থার অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। একাধিক ব্যক্তিকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। দুর্নীতি মামলায় বহুদিন জেলবন্দি তারই সংস্থার কর্মচারী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। জেরার মুখোমুখি হন অভিষেকও। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার (Justice Amrita Sinha) এজলাসে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ইডি জানায়, এখনও পর্যন্ত ‘লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডস’ এর মোট ১৩৪ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তবে ইডির অ্যাকশনে যে বিচারপতি সন্তুষ্ট হন নি। কেন্দ্রীয় এজেন্সি পাঁচ পাতার রিপোর্ট পেশ করতেই পাল্টা বিচারপতি বলেন,’ দুর্নীতির টাকার অঙ্কের অনুপাতে এটা খুব নগণ্য বলে মনে হচ্ছে না?’ ইডির পেশ করা রিপোর্ট দেখে খানিক অসন্তোষই প্রকাশ করেন জাস্টিস সিনহা।
বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির পরিমাণ শুনে ইডি-র উদ্দেশে বিচারপতি সিনহার প্রশ্ন, “অভিযোগ উঠেছে যে টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে। এটা একটা স্ক্যাম। সত্যিই কি চাকরি বিক্রি হয়েছে? তার কি কোনও প্রমাণ আপনারা পেয়েছেন? এই টাকার উৎস কী জানতে আপনারা কি কোনও পদক্ষেপ করেছেন?” উত্তরে কেন্দ্রীয় সংস্থা জানায়, ‘প্রতিদিনই তদন্ত এগিয়ে চলেছে। ‘
ইডি আরও জানায়, এই মামলায় প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের নামও উঠে আসে। তবে তার মামলা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। ইডি জানায়, ধৃত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। সবকিছু শুনে এদিন ফের রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি সিনহা। আগামী ১২ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি ঢাকতেই OMR নষ্ট? কেন মাত্র ১ বছরের জন্য উত্তরপত্র সংরক্ষণ? মুখ খুললেন SSC চেয়ারম্যান
প্রসঙ্গত, এই ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এরই উচ্চপদস্থ কর্তা ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। ‘কালীঘাটের কাকু’-কে গতবছর গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ওই সংস্থার ‘ডিরেক্টর’ ছিলেন অভিষেক। বর্তমানে তিনি সিইও পদে রয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর নামে থাকা যে সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কালীঘাট রোডের দুটি বহুতল। তথ্যনুযায়ী, এর মধ্যে একটি বাড়ি কিনেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ও অপরটি কিনেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়।