‘কালীঘাটের কাকু’র বাড়িতে আসতেন অভিষেক! বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন সুজয়ের দাদা অজয়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গের নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে নবতম সংযোজন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra)। গত মঙ্গলবারই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। আর এই ধৃত সুজয়বাবুকে গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। এই ‘কালীঘাটের কাকু’র বাড়িতেই নাকি অতীতে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ঠিক এমনটাই দাবি সুজয়বাবুর দাদা অজয়কৃষ্ণ ভদ্রের।

সুজয়কৃষ্ণ তৃণমূলের নম্বর টু অভিষেকের একটি অফিসে কাজ করতেন বলে আগেই নিজেমুখে জানিয়েছেন। অভিষেককে মনিব বলেও সম্বোধন করেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তবে অভিষেকের সঙ্গে তার সম্পর্ক এত টুকু ছিল বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। তবে ভাইয়ের গ্রেফতারির পর প্রতিক্রিয়ায় কাকুর দাদা অজয়বাবু প্রথম সারির এক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে বেশ কয়েকবার পা রাখেন অভিষেক।

   

তার সাথে নাকি অভিষেকের পরিচয়ও করিয়ে দেন ভাই সুজয়। গতকাল এই বিষয়ে অজয় ভদ্র বলেন, ‘‘যত দূর জানি, ও (সুজয়কৃষ্ণ) অভিষেকের ওখানে চাকরি করত। কোথায় অফিস, কী অফিস কিছুই জানি না, খালি কানে শোনা। দু’এক বার অভিষেক ওর বাড়িতে এসেছিল। তখন চোখে দেখেছি। পরিচয় করিয়ে বলেছিল, এটা আমার দাদা। আর কোনও রকম কথা হয়নি।’’

রাজনৈতিক মতাদর্শ জানাতে অজয়বাবু বলে, পারিবারিক ভাবে তারা আরএসএসের আদর্শের কাছাকাছি। পরিবার বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত বলেও জানিয়েছেন তিনি। সুজয়, অজয়ের বড় দাদা অমরকৃষ্ণ এখনও আরএসএস এ সক্রিয়। তবে সুজয়কৃষ্ণ যে আরএসএস ছেড়ে পরবর্তীতে তৃণমূল করতেন সেকথাও মেনে নিয়েছেন অজয়বাবু।

sujay 2

প্রসঙ্গত, এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে গোপাল দলপতি প্রথম কাকুর উল্লেখ করেন। এরপর নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের সূত্রেও ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা উঠে এসেছিল। শিক্ষক কেলেঙ্কারির অভিযোগেই ধৃত তাপস মণ্ডল সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছিলেন, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কুন্তল ঘোষ বলতেন, ‘‘কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। ”

তারপরই খোঁজ মেলে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। এরপর তদন্তের স্বার্থে কাকুকে দু’বার তলব করেছিল সিবিআই। সেই সময় একবার নিজে হাজিরা দিয়ে পরের বার আইনজীবীকে দিয়ে কিছু নথি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর ইডির নজরে পরে কালীঘাটের কাকু।

কিছুদিন আগেই সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সেই সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে বেহালায় কালীঘাটের কাকুর একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। গত সপ্তাহে তার বেহালার বাড়িতে তল্লাশি চালায় সংস্থা। সেই সময় সুজয়ের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিল তারা। জানা যায়, সেই মোবাইল থেকেই বেশ কিছু তথ্য তদন্তকারীদের হাতে আসে। এরপরই গোয়েন্দা সংস্থার তরফে ডাক পড়ে তার।

সেই মতোই বুধবার তলব করা হয় ‘কাকু’ কে। আর তারপরই গ্রেফতার। বিগত কিছুমাস ধরে ‘কালীঘাটের’ কাকুকে নিয়ে কম চৰ্চা হয়নি। ইডি সূত্রে খবর, লাগাতার তদন্তে অসহযোগিতা করায় গতকাল রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাকুর গ্রেফতারে এই তদন্ত কোন মোড় নেয় সেটাই এবার দেখার বিষয়।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর