বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam Case) মামলায় নতুন মোড়। এবার এই মামলায় সিবিআইয়ের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রায় ৩ বছর ধরে তদন্ত চলছে নিয়োগ মামলার। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় জেলবন্দি রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সাথেই নাম জড়িয়েছিল শাসকদলের আরও একাধিক নেতা, বিধায়কের। এবার এই নিয়োগ মামলায় উঠে এল পদ্মশিবিরের আরও দুই প্রভাবশালী নেতা-নেত্রীদের নাম।
নিয়োগ মামলায় CBI-এর হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য (Recruitment Scam Case)
সিবিআই সূত্রে খবর শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রার্থীদের নাম সুপারিশের সাথে যুক্ত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ, প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, এবং এমনকি নাম রয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরেরও। প্রসঙ্গত রাজ্যের প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ আগে তৃণমূলে ছিলেন। অন্যদিকে দিব্যেন্দু অধিকারী আগে তৃণমূলের তমলুকের সাংসদ ছিলেন। আদতে তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই। তবে বর্তমানে দিব্যেন্দু এবং ভারতী দু’জনেই বিজেপিতে রয়েছেন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) এবার বিজেপির দুই প্রভাবশালীর নাম জড়ানোয় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (Recruitment Scam Case) তদন্তে নেমে এমনই একটি নাম-তালিকা পেয়েছে সিবিআই। যা ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে রিপোর্ট আকারে পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানেই উল্লেখ করা হয়েছে দিব্যেন্দু অধিকারী, ভারতী ঘোষ, মমতাবালা ঠাকুর-সহ তৃণমূলের শওকত মোল্লার মতো একাধিক প্রভাবশালীর নাম। সিবিআই সূত্রে খবর তাঁরা প্রত্যেকেই চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করেছিলেন। জানা যাচ্ছে ২০টি করে চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলেন দিব্যেন্দু এবং মমতাবালা। এছাড়া আর চারটি নাম সুপারিশ করেছিলেন প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ।
আরও পড়ুন: নিয়োগ মামলায় জামিন চাইলেন ‘কালীঘাটের কাকু’, স্বাস্থ্যের রিপোর্ট চাইল হাই কোর্ট
জানা যাচ্ছে, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam Case) তদন্তে নেমে গত বছর বেশ কয়েক দফায় শিক্ষা দফতরে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সে সময় উদ্ধার হয়েছিল কয়েক ট্রাঙ্ক নথি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি গত বছরের জুন মাসে এমনই একটি অভিযানে বিকাশ ভবনের ওয়্যারহাউসে অভিযান চালিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে তল্লাশি চালিয়েই ওই নথি উদ্ধার করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, দিব্যেন্দু, ভারতীরা যাদের নাম সুপারিশ করেছিলেন, নথিতে তাদেরই নামের তালিকা রয়েছে। জানা যাচ্ছে ওই তালিকা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পাঠানো হয়েছিল। সিবিআইয়ের দেওয়া নথি থেকে জানা যাচ্ছে মোট ৩২৪ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। ওই তালিকায় দেখা যাচ্ছে যাঁরা চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করেছিলেন, তাঁদের নামের সাথে পরিচয়-ও উল্লেখ করা হয়েছে।
সিবিআই-এর ওই নাম তালিকা সামনে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারদিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ‘চক্রান্ত’ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন মমতাবালা ঠাকুর এবং ভারতী ঘোষ। এপ্রসঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমে ভারতী ঘোষ বলেছেন, ‘কারও চাকরির সুপারিশ করিনি। শুধু একজনের ক্ষেত্রে পরীক্ষা কেন্দ্র বদলের অনুরোধ করেছিলাম। এজন্য দুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়ালে আইনি পথে মোকাবিলা করব।’ অন্যদিকে মমতাবালা ঠাকুরের বক্তব্য, ‘পুরোটাই চক্রান্ত।’ তবে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে যা বলার তা আদালত বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেই বলবেন তিনি।