বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এখনও অধরা কণ্ঠস্বর! নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) বহুদিন জেলবন্দি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujaykrishna Bhadra) ওরফে কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku)। সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতারির পর থেকে বিস্ফোরক সব তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে। দুর্নীতির রহস্যভেদ করতে তদন্তকারীদের চাই কাকুর কণ্ঠস্বর। আর সেই কণ্ঠস্বরের নমুনা নিয়ে বারবার টালবাহানা।
তৈরী হবে মেডিক্যাল বোর্ড
অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ! আর সেই কারণেই কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। ঠিক কতটা অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কালীঘাটের কাকুর শারীরিক অবস্থা কেমন আছে জানতে এবার মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করবে জোকা ইএসআই হাসপাতাল। শনিবার আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত মেডিক্যাল বোর্ড তৈরির নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্রের খবর, কণ্ঠস্বরের নমুনা দেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা সুজয়কৃষ্ণের আছে কি না, সে বিষয় খতিয়ে দেখতেই মেডিক্যাল বোর্ড গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানিয়ে রাখি, ইডির করা আবেদনের প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সুজয়কৃষ্ণের জন্য তৈরী হওয়া বিশেষ মেডিক্যাল টিমে থাকবেন ইএসআইয়ের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক। থাকবেন একজন ইডির অফিসারও।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই সুযোগ! থাকছে একটানা ছুটি, সরকারি তালিকা দেখে জলদি বানিয়ে ফেলুন হলিডে প্ল্যান
প্রসঙ্গত, গ্রেফতারির প্রথম দিকে জোকা ইএসআই হাসপাতালেই সুজয়কৃষ্ণর চিকিত্সা করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার সমস্ত রেকর্ড জোকায় রয়েছে। তাই এবার জোকা ইএসআই হাসপাতালকেই মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগে যা হয়েছিল
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর তথ্য গোপন, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গত মার্চ মাসে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
তদন্তকারীদের দাবি, বিষ্ণুপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে বহুদিন আগে।
ইডির দাবি এই সুজয়কৃষ্ণই রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে কল রেকর্ডিং এ সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। মেলে আদালতের সবুজ সংকেতও।
কণ্ঠস্বর সংগ্রহে একের পর এক বাধা
তবে এরই মধ্যে হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হয় তার।
এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। এরপর হাসপাতালে গিয়েই কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করার অনুমতি দেয় আদালত। তবে এখনও সেই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।