নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর? কার নাম ফাঁস হবে? আসল ঘটনা…

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) বহুদিন জেলবন্দি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujaykrishna Bhadra) ওরফে কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku)। সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে। তারপরই কাকুর কণ্ঠস্বর পেতে ময়দানে নামে তদন্তকারীরা। তবে চাইলেই কী আর পাওয়া যায়! একের পর এক বাধা, এখনও অধরা কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর।

কিন্তু কেন এত গুরুত্বপূর্ণ কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর?

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর তথ্য গোপন, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গত মার্চ মাসে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

তদন্তকারীদের দাবি, বিষ্ণুপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে বহুদিন আগে।

আরও পড়ুন: কোমর বেঁধে ময়দানে দুই বিচারপতি! এবার জাস্টিস গাঙ্গুলির পথেই জাস্টিস সিনহা, ভয়ে কাঁপছে ‘ওরা’

ইডির দাবি এই সুজয়কৃষ্ণই রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে কল রেকর্ডিং এ সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। মেলে আদালতের সবুজ সংকেতও।

কণ্ঠস্বর সংগ্রহে একের পর এক বাধা

তবে এরই মধ্যে হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হয় তার।

এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। এরপর হাসপাতালে গিয়েই কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করার অনুমতি দেয় আদালত। সেই নিয়ে হাসপাতালকে অক্টোবর মাসে চিঠিও দেয় ইডি।

তবুও অধরা কণ্ঠ

গত সপ্তাহে ইডির সেই চিঠির জবাব দিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড (Medical Board) গঠন করা হচ্ছে। সমস্ত দিকে দেখে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রথমে রোগীর (সুজয়কৃষ্ণের) শারীরিক অবস্থাকে বিবেচনা করা হবে। এমনটাই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।

sujay krishna sskm

তবে হাসপাতালের দাবি মানতে নারাজ ইডি। তাদের পাল্টা দাবি, কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে চাইছে। হাসপাতাল সহযোগিতা না করলে, ভবিষ্যতে হাইকোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে ইডি। কারণ সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা একবার হাতে আসলে পাকা প্রমাণ পাবে ইডি।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর