বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত দুদিন থেকে সংবাদের শিরোনামে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) জীবন কৃষ্ণ সাহা (Jibon Krishna Saha)। আর থাকবেন নাই বা কেন? সিবিআই (CBI) কর্তারা যে বাড়িতে অতিথি হয়ে বসে আছেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সদ্য নাম জড়িয়েছে শাসকদলের এই বিধায়কের। প্রথমে একটি মামলায় নাম জড়িয়েছিল, তবে এবার সূত্রের খবর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথিতে আরও দুটি মামলায় নাম জড়িয়েছে তার। প্রাইমারি-আপার প্রাইমারি নিয়োগ দুর্নীতিতেও হাত রয়েছে জীবনের, এমনটাই দাবি তদন্তকারী সূত্রে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুর ১২টায় বিধায়কের বাড়ি পৌঁছয় সিবিআই এর একটি টিম। এরপর থেকেই চলছে টানা তল্লাশি। সিবিআই সূত্রে অভিযোগ, সেদিনই জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন অসুস্থতার কথা বলে শৌচালয়ে গিয়ে নিজের দুটো মোবাইল পুকুরে ফেলে দেন তৃণমূল বিধায়ক। তথ্য লোপাট করতেই এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জানা গিয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জলে ফেলে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা অভিযোগ আনবেন তদন্তকারীরা।
কোনো দোষ যদি নাই করে থাকেন তবে কিসের ভয়ে শেষমেশ পুকুরে ছুড়লেন ফোন! সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে বিধায়ক এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন যে, তার মোবাইল গুলি দীর্ঘক্ষণ জলে থাককে, তার থেকে ডেটা উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব। বা হলেও সেটা কঠিন কাজ। তবে এই বোকামিই সমস্তটা পরিষ্কার করে দিয়েছে সিবিআই এর কাছে। তার বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ যে এই মোবাইকে লুকিয়ে, সেটা বুঝতে বাকি নেই তদন্তকারীদের।
সূত্রের খবর, গত দুদিন ধরে তল্লাশির পর আজ বিধায়কের একটি ফোনের হদিশ মিলেছে। এখনও ওপরটি খোঁজার কাজ চলছে। অভিজ্ঞ আইনজীবীদের বক্তব্য, সিবিআই তদন্তের মাঝেই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে জীবনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারেন গোয়েন্দারা। বিধায়কের একটি মোবাইল উদ্ধার হওয়ার পর তদন্তকারীরা টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই মোবাইল থেকেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষের সঙ্গে কি বিধায়ক যোগাযোগ রাখতেন কিনা সেই বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে সূত্রের খবর, জীবন সাহার পাশের বাড়ির বাগান থেকে ছটি নথি ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একগুচ্ছ নথি উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকে। এখানেই শেষ নয়, বিধায়কের বাড়ির অদূরে একটি প্রাচীরের ঝোপ থেকে একাধিক ব্যাগভর্তি করে রাখা তথ্য উদ্ধার করেছে সিবিআই। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত প্রায় তিন হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থীর তথ্য বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেন তার বাড়িতে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা? এই নিয়ে করা প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক যা জবাব দিয়েছেন, তাতে তদন্তকারীরা সন্তুষ্ট নন বলেই জানা গিয়েছে।