‘কুন্তলই আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে…’, টানা দুঘন্টা জেরার পর CBI বেরিয়ে যেতেই বিস্ফোরক দলপতির মা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পয়লা বৈশাখের দিনেই নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) তদন্তে সিবিআই এর ম্যারাথন তল্লাশি রাজ্য জুড়ে। গতকাল মুর্শিদাবাদের তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দেওয়ার পর আজ দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) খেজুরি বিধানসভার ভগবানপুর-২ ব্লকের খিরিশবাড়ি এলাকায় গোপাল দলপতির (Gopal Dalapati) বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই (CBI)।

জানা গিয়েছে, এদিন ৪টি গাড়িতে করে সিবিআই এর ৮ প্রতিনিধির একটি দল ভগবানপুরে গোপালের বাড়িতে পৌঁছয়। দুঘন্টা মত সেখানে ছিলেন তদন্তকারীরা। এরপর বেরিয়ে যান। সূত্রের খবর, সিবিআই আধিকারিকরা প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট গোপালের মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। ছেলে সম্পর্কে নানা বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

   

একটানা জেরার পর সিবিআই কর্তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে গোপাল দলপতির মা লক্ষ্মী দলপতি বলেন, তিনি সবরকম তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের সাহায্য করেছেন। তবে একইসঙ্গে বিস্ফোরক অভিযোগ করে বসেন লক্ষ্মীদেবী। সংবাদমাধ্যমে সামনে কাঁপা কাঁপা গলায় বৃদ্ধা বলেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষই তার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) গোপাল দলপতির নাম এই প্রথম এল তেমনটা নয়। কিছুদিন আগেই গোপাল দলপতিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি এবং সিবিআই। দেখা হয়েছিল তার একাধিক নথিপত্র। শুধু গোপালই নয়, কেলেঙ্কারি কাণ্ডে নাম উঠেছিল তার স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়েরও। সেই নিয়ে বেশ কিছুদিন চর্চা চলেছিল। সংবাদের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিল এই দম্পতির জুটি।

উল্লেখ্য, ভগবানপুর-২ ব্লকের খিরিশবাড়ি এলাকায় গোপাল দলপতির বাড়ি। দুমাস আগেই নাকি গোপাল দলপতি এই বাড়িতে এসেছিলেন। তখন দেখা করেন মায়ের সাথে। সেই সময় ছেলের সঙ্গে তার কী কথা হয়েছিল সেসব জানার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে, কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি ‘খুব আর্জেন্ট’ বলে একটা চিঠির মতো খাম দিয়ে গিয়েছিলেন তাকে। তাতে কী লেখা ছিল সেই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন ওঠে।

gopal cbi

একটি চিটফান্ড মামলায় দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন গোপাল। বর্তমানে জামিনে মুক্ত হলেও নিয়োগ দুর্নীতিতে উঠে এসেছে তার নাম। পাশাপাশি তদন্তকারী সূত্রে খবর এখনও পর্যন্ত গোপাল ও তার স্ত্রীর নামে বিপুল পরিমান সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। সেইসব সম্পত্তির উৎস কী। কোথা থেকে এল কোটিকোটি টাকা সেই নিয়ে চলছে তদন্ত।

যদিও গোপাল-পত্নী হৈমন্তীকে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গোপালকে পূর্বে একাধিকবার জেরা করার পর এবার সরাসরি তার পৈতৃক বাড়িতে হানা দিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। জানিয়ে রাখি, শনিবার গোপালের বাড়িতে হানা দেওয়ার কিছুক্ষন আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তিনটি টিম তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারীর নলহাটির বাড়ি, আশ্রম এবং কলকাতার বৈঠকখানা রোডের ফ্ল্যাটে পৌঁছে গিয়েছে।

উল্লেখ্য, এই গোপাল দলপতির মুখেই প্রথম উঠে এসেছিল কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নাম। তারপর তাকে জেরাও করে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি তৃণমূল কংগ্রেস যুবর প্রাক্তন নেতা কুন্তল ঘোষের মুখেও বহুবার উঠে এসেছে এই গোপাল দলপতি ও তার স্ত্রীর নাম। কুন্তলের মতে নিয়োগ দুর্নীতির যাবতীয় টাকা রয়েছে গোপালের কাছেই।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর