‘কাকু’র গলা মিললেই কেল্লাফতে! ডাকা হবে ফোনে থাকা ‘এই’ প্রভাবশালীকে, তোড়জোড় শুরু ED-র

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় বহুমাস জেলবন্দি কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujaykrishna Bhadra) ওরফে কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku)। আর সম্প্রতি এই নাম নিয়ে রীতিমতো শোরগোল। নেপথ্যে তার কণ্ঠস্বর। দুর্নীতির তদন্তে নেমে আগেই মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কাছ থেকে। কিন্তু সেখানে পাওয়া কল রেকর্ডিং এর এক প্রান্তের গলা যে ‘কাকু’র, তা প্রমাণ করতে চাই ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা। তবে এখনও অধরা সেই কণ্ঠস্বর!

কেন এত গুরুত্বপূর্ণ সেই কণ্ঠস্বর?

প্রথমত, সুজয়কৃষ্ণের গলার স্বরের নমুনার সঙ্গে ওই অডিয়ো ক্লিপের কণ্ঠস্বর মিলে গেলে তবেই প্রামাণ্য নথি হিসেবে আদালত গ্রহণ করবে। দ্বিতীয়ত, অডিয়ো ক্লিপের অপর প্রান্তে থাকা ‘প্রভাবশালীদের’ও পরিচয় সামনে আসবে। এরপর ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির গলার স্বরের নমুনাও পরীক্ষা করে দেখা হবে। একবার কাকুর গলার স্বরের নমুমা মিললেই কোমর বেঁধে ময়দানে নামতে পারবে ইডি।

আরও পড়ুন: শীতের মধ্যেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে শুরু হবে ঝেঁপে বৃষ্টি! কখন? মাথা ঘোরানো আপডেট IMD-র

মানসিক চাপে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু

তবে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে বারংবার জানানো হচ্ছে অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ। সম্প্রতি চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রবল মানসিক চাপে রয়েছেন কালীঘাটের কাকুর। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতাও রয়েছে। এই অবস্থায় তার গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গেলে সমস্যা বাড়বে। তবে ইডিও ছাড়ার পাত্র নয়। কণ্ঠস্বরের নমুনা দেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা সুজয়কৃষ্ণের আছে কি না, সে বিষয় খতিয়ে দেখতে তৎপর সংস্থা।

আগে যা হয়েছিল

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর তথ্য গোপন, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গত মার্চ মাসে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তকারীদের দাবি, বিষ্ণুপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে বহুদিন আগে।

ইডির দাবি এই সুজয়কৃষ্ণই রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে কল রেকর্ডিং এ সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। মেলে আদালতের সবুজ সংকেতও।

কণ্ঠস্বর সংগ্রহে একের পর এক বাধা

তবে এরই মধ্যে হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হয় তার।

sujay krishna f

এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। এরপর হাসপাতালে গিয়েই কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করার অনুমতি দেয় আদালত। তবে এখনও সেই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর