বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুমাস ধরে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে ধুন্ধুমার দশা রাজ্যে। নজিরবিহীন নিয়োগ শিক্ষক কেলেঙ্কারি কাণ্ডে একের পর এক চাকরি হারাচ্ছেন অযোগ্যরা (Job Cancel)। যত দিন যাচ্ছে, ততই লম্বা হচ্ছে বাতিলের তালিকা। গতবছর প্রথম অনিয়ম করে পাওয়া চাকরি হারান রাজ্যের মন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট নেতার কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রায়ে মে মাসে চাকরি যায় তার।
সেই থেকে শুরু, ২২ পেরিয়ে বর্তমানে ২৩, প্রায় এক বছর হতে চললেও লাগাম পড়েনি চাকরি বাতিলে। এরপর থেকে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে একের পর এক শুনানিতে অনিয়ম, অন্যায় করে পাওয়া চাকরি হারিয়েছেন শয়েশয়ে শিক্ষক-অশিক্ষকেরা। প্রাথমিক শিক্ষক থেকে শুরু করে, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক এবং স্কুলের শিক্ষাকর্মীও, সব জায়গায় দুর্নীতির ছোঁয়া। তাই রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রকে পুনরায় দুর্নীতি মুক্ত করে তুললে চাকরি যাচ্ছে বহুজনার।
জানিয়ে রাখি, সেই প্রথম থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন মোট ৪,৭৮৪ জন। যদিও তদন্ত যত এগোবে এই সংখ্যাটা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে হাই স্কুলের ১,৯১১ গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিল হয় ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। শুধু তাই নয়, এই সমস্ত কর্মীদের বেতন ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
গ্রুপ ডির পর হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশে নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগে ৬১৮ ‘অযোগ্য’ শিক্ষকের চাকরি যায়। সেই ধারাই অব্যাহত রেখে পরে আরও ১৫৭ জন শিক্ষকের চাকরি যায়। অন্যদিকে, গত বছরের মে- জুন মাসে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গঠিত বাগ কমিটির সুপারিশে ৯৯০ জন কর্মী চাকরি হারায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গ্রুপ ডি-র ৬০৯ জন এবং গ্রুপ সি-র ৩৮১ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন।
গ্ৰুপ সি তেও চাকরি হারায় বহুজনা। গত ১০ মার্চ, ওএমআর শিট কারচুপির জন্য গ্রুপ সি’তে চাকুরীরত ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় থেকেই এদের স্কুলে প্রবেশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বিচারপতি। তবে তাদের বেতন ফেরত দিতে হবে কি না সেই বিষয়ে আদালত এখনও কিছু জানায়নি। এই কর্মীদের একাংশ বিচারপতির রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন।