‘যা করেছি, সবই বোর্ডের নির্দেশে, আর…’, CBI-র চাপে মুখ খুললেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কৌশিক

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) তোলপাড় গোটা রাজ্য। জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, নেতা বিধায়ক থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিক। এরই মধ্যে একের পর এক গ্রেফতার। সোমবার পার্থ নামের এক জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI)। তার সূত্র ধরেই গতকাল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন করে কৌশিক মাজিকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা।

সোমবারই ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক সংস্থা এস এন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির আধিকারিক পার্থ সেনকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। আর পরদিন এস বসুরায় অ্যান্ড কোম্পানির আরও এক কর্তাকে গ্রেফতার করল সিবিআই। মঙ্গলবার দুপুরে কৌশিক মাজি (Kaushik Maji) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ধৃত কৌশিক মাজিকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে নিম্ন আদালত।

সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে বড় ভূমিকা ছিল কৌশিকের। ওএমআর স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে দেদারে চলত দুর্নীতি। এই কৌশিক এমন ভাবে ওএমআর শিট সংরক্ষণ করিয়েছিলেন, যাতে তা এডিট করা যায়। উত্তরপত্রের ‘ইমেজ কপি’ না রেখে ‘টেক্সট ফর্মাট’- এ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই কৌশিকই। যাতে এডিট করা সহজ হয়।

আরও পড়ুন: আজই DA বাড়ছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের? পুজোর মাসে কে কতটা মালামাল হবেন?

ওএমআর এর ব্যাকআপ না রাখার সিদ্ধান্তও কৌশিক ও তার সংস্থার অংশীদারেদের ছিল বলেই দাবি সিবিআই এর। ওদিকে কৌশিকের আইনজীবীর দাবি, তার মক্কেল যা করেছেন সবটাই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নির্দেশে করেছেন।

omr cbi

ইতিমধ্যেই কৌশিককে একাধিক বিষয়ে টানা জেরা করেছে সিবিআই। তবে তদন্তকারী সংস্থার দাবি সংস্থার মৃত অংশীদার গৌতম মুখোপাধ্যায় এবং অশোক মাজির উপর সময় দায় চাপিয়েছেন কৌশিক। এই কৌশিক ও ধৃত পার্থকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই।

সিবিআই সূত্রে অভিযোগ, প্রাথমিক টেটে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা এজেন্টদের কাছে পৌঁছে দিতেন কৌশিক মাজি। বিনিময়ে চলত টাকার খেলা। প্রসঙ্গত, ধৃত পার্থের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ উঠে এসেছে। সিবিআই এর অভিযোগ, ২০১৭ সালে প্রাথমিক টেটে মোট ৭৫২ জন অযোগ্য প্রার্থীর তালিকা তৈরি করে পর্ষদকে দিয়েছিলেন এই পার্থ টু। যার মধ্যে ৩০০ জন অযোগ্যর চাকরিও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

জানা যাচ্ছে কিছুদিন আগেই সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পার্থ সেনকে। তার বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপর সোমবার কলকাতায় সিবিআই অফিসে তলব করা হয়েছিল। তারপরই গ্রেফতার। সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ার উত্তরপত্র (OMR Sheet) মূল্যায়ন ও ওএমআর শিট প্রস্তুত করার দায়িত্বে ছিল এস এন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ওই সংস্থার দুই আধিকারিক হাওড়ার দাশনগরে কৌশিক মাজি এবং সল্টলেকের সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। বেশ কিছু নথি পত্র, কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কও বাজেয়াপ্ত করেছিল সিবিআই। এরপরই কৌশিক মাজিকে গ্রেফতার করল গোয়েন্দারা।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর