‘কোনও দোষই করিনি, রাজসাক্ষী হতে যাব কেন?’, তাপস, নীলাদ্রি রাজি থাকলেও ভিন্ন সুরে কুন্তল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ক্রমশ্যই লম্বা হচ্ছে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় নিযুক্তদের তালিকা। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শিক্ষক কেলেঙ্কারি মামলায় ধৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh), মিডলম্যান নীলাদ্রি ঘোষ, ও বেসরকারি বিএড ও ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। তাপস ও নীলাদ্রির এই মামলায় রাজসাক্ষী হতে কোনো আপত্তি নেই বলে এদিন আলিপুর আদালতে জানান তাদের আইনজীবীরা।

সূত্রের খবর, আদালতে সওয়াল-জবাবের সময়ে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা বিচারককে জানান, সিবিআই যদি মনে করে, তাপস ও নীলাদ্রিকে ‘রাজসাক্ষী’ করবে, তা হলে তাদের তাতে কোনও অসুবিধা নেই। সবরকম আইনি সাহায্য করতে তারা প্রস্তুত। অন্যদিকে, একমাত্র ব্যতিক্রম কুন্তল।

এ দিন আদালতের বাইরে কুন্তলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অন্যদের মতো তিনি রাজসাক্ষী হবেন কি না? প্রশ্নের জবাবে তৃণমূল যুবনেতা বলেন, “আমি রাজসাক্ষী হতে যাব কেন?” পাশাপাশি তার কথায়, “কেন আমি রাজসাক্ষী হতে যাব? কোনও দোষই তো করিনি।”

আলিপুরের বিশেষ আদালতে বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসেই এই তিন অভিযুক্তকে তোলা হয়। এদিন দুর্নীতির মামলায় উঠে আসা সরকারি আধিকারিকদের বয়ান সাক্ষ্যের আকারে লিপিবদ্ধ করার জন্য তদন্তকারী অফিসারকে ‘পরামর্শ’ দেন বিচারপতি। ষড়যন্ত্রের শীর্ষে পৌঁছতে এবং তদন্তে অগ্রগতি আনতে আইনি পদ্ধতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা বলেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়।

সিবিআইয়ের আইনজীবী কোর্টে জানান, “বড় ষড়যন্ত্র হয়েছে। সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সাক্ষীরা বিপথে চালনা করার চেষ্টা করছে। তাই সতর্ক হয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। তবে এই দুর্নীতির এক জন ষড়যন্ত্রকারী সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন।”

kuntal ghosh

পাশাপাশি তাপস ও নীলাদ্রির রাজসাক্ষী হতে কোনো আপত্তি নেই সেকথাও আদালতে জানান সিবিআই এর আইনজীবী। অন্যদিকে, কুন্তলের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে শিক্ষা দপ্তরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। বোর্ডের কতজন অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই? কুন্তল ঘোষ তো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কেউ নন। তার চাকরি দেওয়ারও ক্ষমতা নেই। তা হলে তাকে কেন আটকে রাখা হয়েছে? সিবিআই নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এমন করছে।”

পাশাপাশি তাপস ও নীলাদ্রির আইনজীবীও মক্কেলদের জামিনের পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন। এই প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে টাকা তোলার পর কুন্তল এবং অন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তাপস। তাই তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’ সব পক্ষের কথা শুনে কুন্তল, নীলাদ্রি ও তাপসকে ফের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর