বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে বর্তমানে জেলবন্দি হুগলীর প্রাক্তন যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। কুন্তল গ্রেফতারির পর থেকে ৯০ ডিগ্রি কোণে ঘুরে গিয়েছে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। কুন্তলের সূত্র ধরেই একে একে উঠে এসেছে বহুজনার নাম। কেলেঙ্কারির মামলায় বৃহস্পতিবার কুন্তলকে ফের একবার আদালতে পেশ করা হয়। এর আগে আদালতে ঢোকার মুখে কুন্তল দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নাম বলানোর জন্য তাকে চাপ দিচ্ছে ইডি ও সিবিআই (ED and CBI)।
আর এদিন শুধু মৌখিক অভিযোগ নয়, এবার আদালতকে চিঠি দিলেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষ। এবারে জেল থেকে সোজা বিচারককে চিঠি লিখে তার দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য তার উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কুন্তলের লেখা এই চিঠি আদালত কক্ষে দেখিয়ে বিচারক তার আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, এই চিঠিতে যা অভিযোগ করা হচ্ছে তা তো আপনারা কখনও আদালতে বলেননি? জবাবে কুন্তলের আইনজীবী জানান, ‘জেলে কুন্তলের সঙ্গে আমরা দেখা করতে পারছি না। এ ব্যাপারে তাই আমরা কিছু বলতে পারিনি।’
এদিন আদালত থেকে বেরনোর সময় কুন্তল বলেন, “এর আগে আমি যা বলেছি আদালতকেও একই কথা জানিয়েছি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য আমার ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে।” কে চাপ দিচ্ছে একথা জিজ্ঞেস করলে তার উত্তরে কুন্তল বলেন, “সব চিঠিতে লিখেছি”।
এদিকে জেলবন্দি কুন্তলের করা মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কুন্তলের এহেন অভিযোগ নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘কুন্তল এখন একা হয়ে গিয়েছে। তাই দলকে পাশে পেতে চাইছে। অথবা এও হতে পারে যে অভিষেকই রাজনৈতিক সুবিধার জন্য তাকে দিয়ে এসব বলাচ্ছে। কুন্তল আসলে দুর্নীতির টাকা রক্ষা করার জন্য প্রভুর লিখে দেওয়া চিত্রনাট্য বলছেন। এসবই আসলে নাটক, নজর ঘোরানোর চেষ্টা।”
অন্যদিকে, কুন্তলের দেওয়া চিঠি নিয়েই ইতিমধ্যেই আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাদের মতে যদি কুন্তল ঘোষের সত্যিই কিছু বলার থাকে তবে তিনি আইনজীবী মারফৎ বা সরাসরি নিজে আদালতকে জানাতে পারতেন। যেহেতু নিয়মিত তাকে সশরীরে আদালতে পেশ করা হয়। এত রাস্তা থাকতে হঠাৎ জেলে বসে তিনি চিঠি লিখতে গেলেন কেন? এর পেছনেও কী কোনো প্রভাবশালীর হাত রয়েছে? কোনোভাবে কী চাপ দিয়ে তাকে দিয়ে এসব চিঠি লেখানো হচ্ছে? এই সকল প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।