বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। একই সঙ্গে গতকাল আদালতের নির্দেশে জেলের সাজা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattacharya)। এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্সি (Presidency) সংশোধনাগারে প্রবেশের সময় ‘পার্থদা’ বলে ডাক দেন মানিক। তবে এক্ষেত্রে অপর প্রান্ত থেকে কোনরকম জবাব আসে নি বলেই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য তৃণমূল বিধায়ককে সেখান হতে সরিয়ে দেয় জেলের কর্মীরা।
উল্লেখ্য, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় অতীতেই ইডির হাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না মেলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। পরবর্তীতে ইডির পাশাপাশি বর্তমানে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রয়েছেন পার্থ। পাশাপাশি গতকাল আদালতের নির্দেশের পর মানিক ভট্টাচার্যকেও প্রেসিডেন্সি নিয়ে যাওয়া হয়।
দীর্ঘ ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের পর বর্তমানে মানিককে রাখা হবে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। এক্ষেত্রে অফিস ঘরে যাওয়ার সময় পহেলা বাইশ ওয়ার্ডের দুই নম্বর সেলের নিকট গিয়ে মানিক জানতে পারেন, সেখানেই রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা একদা তাঁর সতীর্থ পার্থ। সেই সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘পার্থদা’ বলে ডাক দেন তৃণমূল বিধায়ক। তবে অপর প্রান্ত থেকে কোনরকম উত্তর না আসায় পরবর্তীতে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয় মানিককে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যেই মানিকের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথির সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা অফিসাররা। এর মাঝেই বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে ফের একবার উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রসঙ্গত, গতকাল পুনরায় একবার মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতে পেশ করা হয়। এক্ষেত্রে মানিকের বিরুদ্ধে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন করে ইডি। তবে আদালতের তরফ থেকে তিন দিনের হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় অর্থাৎ আগামী ২৮ তারিখ পুনরায় একবার আদালতে পেশ করা হবে তাঁকে।
আদালতে ইডির আইনজীবীর তরফ থেকে দাবি করা হয়, মানিক ভট্টাচার্য এবং তাঁর পরিবারের লোকজনের নামে একাধিক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এক্ষেত্রে ২০১৬ সালে মৃত এক ব্যক্তির (মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী) নামের সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে মানিকবাবুর স্ত্রীয়ের। ইডির দাবি অনুযায়ী, উক্ত অ্যাকাউন্টে রয়েছে তিন কোটি টাকা। এছাড়াও পরিবারের অন্যান্য সদস্য মিলিয়ে সেই সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি। যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, দুই ব্যক্তির নামে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থাকার পাশাপাশি যদি কোনো একজন মারা যান, তবে অপরজন সেই অ্যাকাউন্ট চালাতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে বেআইনি লেনদেনের দাবি করেছে সিবিআই।
শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ি থেকে দুটি ফোল্ডারের সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা। এক্ষেত্রে মোট চার হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে আড়াই হাজার জনকে নিয়োগের পিছনে মানিকের হাত রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দা সংস্থার। পাশাপাশি ডিএলএড কলেজের অফলাইন ভর্তি থেকেও ছাত্র প্রতি ৫০০০ টাকা করে কাটমানি নিতেন মানিক ভট্টাচার্য।