বাংলাহান্ট ডেস্ক: সরকার বদলেছে। কিন্তু তাঁদের কথা শোনেনি কেউ। দিনের পর দিন বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তাঁরা। শুধু তৃণমূল সরকার নয়, বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীনও মেলেনি চাকরি। পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পাননি বহু চাকরিপ্রার্থী (Recruitment scam)। বাতিল হয়ে গিয়েছিল প্যানেল। এই বিষয় সংক্রান্ত মামলা চলছে আদালতে। কিন্তু আশার আলো দেখছেন না তাঁরা। তাই রোদ-জল উপেক্ষা করে বেছে নিয়েছেন ধর্না মঞ্চ। এর মধ্যে সোমবার মেয়ো রোডের ধর্নামঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাথমিকের এক চাকরিপ্রার্থী।
জানা গিয়েছে, ধর্না মঞ্চে বসে থাকাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ওই চাকরিপ্রার্থীর নাম দেবাশিস বিশ্বাস। পুলিশি তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। দেবাশিসকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। ধর্না মঞ্চে বসে থাকা অন্য এক চাকরিপ্রার্থী জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাকরির দাবিতে লড়ছেন তাঁরা। আর কোনও উপায় না দেখে অবশেষে বেছে নিয়েছেন ধর্না মঞ্চ। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে চলছে এই ধর্না। ওই চাকরিপ্রার্থী জানালেন, দীর্ঘদিন ধরে ধর্নায় বসে অনেকেই ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
২০০৯ সালে অর্থাৎ বামফ্রন্ট সরকারের আমলে প্রাথমিকে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষা হয় ২০১০ সালে। ধর্নারত অবস্থায় থাকা প্রার্থীরা মূলত ২০০৯ সালের প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে। ক্ষমতায় আসে বর্তমান শাসক দল তৃণমূল। সেই সময় ২০০৯ সালের ওই প্যানেল বাতিল হয়ে যায়। প্যানেলটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছিল রাজ্য সরকার।
আবারও ২০১২ সালে পরীক্ষা হয়। এবার অভিযোগ ওঠে, সব জেলার ক্ষেত্রে প্রাথমিকের নিয়োগ হলেও বাদ পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এ বছর দুর্গা পুজোর অষ্টমীর দিন থেকে তাই সেই সব প্রার্থীরা চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। উল্লেখ্য, ১৩ বছর আগে ওই বিজ্ঞপ্তি যখন প্রকাশিত হয়, তখন টেট ছিল না। সেই সময় জেলা ভিত্তিক নিয়োগ করা হত।
এই নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছে, গত কয়েক বছরে বাকি সব জেলার নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে কোনও সুরাহা হয়নি। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত মামলাও চলছে আদালতে। ধর্মতলায় কেবল প্রাথমিক নয়, আরও বহু চাকরিপ্রার্থী দিনের পর দিন নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের ভাগ্যেই এখনও জোটেনি সুবিচার।