হাউমাউ করে কান্না বিধায়ক জীবনকৃষ্ণর, তদন্তে গতি আনতে আরও অফিসার মোতায়েন CBI-র

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পেরিয়ে গিয়েছে গোটা একটা দিন। গতকাল দুপুর ১২ টা থেকে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) বাড়িতে টানা তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই (CBI)। মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বর্তমানে সেখানে হাজিরা রয়েছে সিবিআই এর মোট ছ’টি দল। সূত্রের খবর, বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দু’বস্তা নথি (Documents)। যার মধ্যে প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি এবং নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চাকরি প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

অন্যদিকে, দফায় দফায় চলছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জীবনকৃষ্ণকে। সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তকারী অফিসারদের সামনে বারবার হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বিধায়ক। খাওয়া-দাওয়াও মাথায় উঠেছে। জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে একটা রুটি আর একটু তরকারি খেয়েছিলেন তিনি। সকালে এক কাপ চা আর একটা বিস্কুট ব্যাস।

   

অনেকের মতে লাগাতার জেরায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। কেউ কেউ তো আবার বলছেন হতে পারে তার স্মৃতিতে ভাসছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথা। কারণ গত বছরের পার্থবাবুকেও ২৩ জুলাই এভাবেই চব্বিশ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তার নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল আরেক তদন্তকারী সংস্থা ইডি।

অন্যদিকে, বিপুল নথির পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ডায়েরি। সিবিআই সূত্রে খবর, বিধায়কের ওই ডায়েরিতে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত লেনদেনের হিসেব লেখা থাকতে পারে। অন্যদিকে গতকাল দুপুর ২টায় সিবিআই আধিকারিকরা তার রঘুনাথগঞ্জের শ্বশুরবাড়িতেও তল্লাশি চালায়। যার মাধ্যমে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলে দাবি করেছে গোয়েন্দাদের ওই সূত্র।

tmc mla jiban krishna saha ,,

বর্তমানে তৃণমূল বিধায়কের বাড়ির সামনে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি এদিন সকাল থেকে মোতায়েন রয়েছে রাজ্য পুলিশ। সিবিআই সূত্রে অভিযোগ, গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন অসুস্থতার কথা বলে শৌচালয়ে গিয়ে দুটো মোবাইল পুকুরে ফেলে দেন তৃণমূল বিধায়ক। তথ্য লোপাট করতেই এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, গতকাল থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে পেরিয়ে গেলেও এখনও খোঁজ চলছে সেই জোড়া ফোনের। সিবিআই সূত্রে খবর, রাতে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় মোবাইল খোঁজার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে এদিন সকাল থেকেই ফের শুরু হয়েছে তল্লাশি। জানা গিয়েছে, মোবাইল খুঁজে বার করতে আনা হয়েছে মেটাল ডিটেক্টর।

সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূলের প্রাক্তন যুবনেতা কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্থানীয় এক এজেন্টে কৌশিকের নাম সামনে আসে। এরপরেই শুরু হয় খোঁজখবর। সিবিআই সূত্রে খবর, সেই এজেন্টের সূত্র ধরেই বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার নাম উঠে এসেছে। তবে বছরের প্রথম দিনই এমন কাণ্ডে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন তার বাড়ির সদস্যরাও।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর