বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ক্রমশ্যই লম্বা হচ্ছে নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) অভিযুক্তদের তালিকা। ২০২২ সাল থেকে শিক্ষায় কেলেঙ্কারি নিয়ে শোরগোল গোটা রাজ্যে। দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বহু তৃণমূল বিধায়ক, যুবনেতা সহ শিক্ষা দফতরের আধিকারিক। একজোটে নিয়োগে দুর্নীতির তদন্ত চালাচ্ছে ইডি-সিবিআই। আর পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো বেরিয়ে আসছে একের পর এক নাম। তবে এবার নিয়োগ দুর্নীতিতে এক তালিকা সামনে এনেছে সিআইডি (CID)। যাতে জ্বলজ্বল করছে তৃণমূলের ছাত্রনেতাদের নাম। আর এই নিয়েই রীতিমতো শোরগোল।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) একটি রিপোর্ট পেশ করেছে সিআইডি। সূত্রের খবর সেই রিপোর্টে একজন সরকারি আধিকারিকের দেওয়া একটি চিঠি রয়েছে। আর তাতেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নাম উঠে এসেছে। পাশাপাশ নাম রয়েছে টিএমসিপি-র সহ সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তীর (Prantik Chakraborty)। এই প্রান্তিক চক্রবর্তীর আরেক পরিচয় তিনি তৃণমূল নেত্রী রাজন্যা হালদাদের (Rajannya Halder) স্বামী।
সম্প্রতি, তৃণাঙ্কুর ও প্রান্তিককে নিয়ে এক বিস্ফোরক চিঠি দিয়েছে সিআইডি। সেই চিঠিতে প্রান্তিককে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব রয়েছে প্রান্তিকের ওপর।
অভিযোগ, ২০১৮-১৯ সালে কোনও নিয়োগ পদ্ধতি ছাড়াই টাকার বিনিময়ে শিক্ষক পদে ৮৫০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তৃণাঙ্কুরই নাকি ছিল এর মূল মাথা। তৃণমূল নেতার গাড়িতেই নাকি ঘুরত এই নিয়োগ দুর্নীতির টাকা। আর চাকরি বিক্রি করে যে টাকা তোলা হত তা ঢুকত প্রান্তিকের GPAY অ্যাকাউন্টে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে চিঠিতে।
কে ওই বিস্ফোরক চিঠি দিয়েছে তা অবশ্য জানা যায়নি। প্রেরক নিজের পরিচয় গোপন রেখেছেন। চিঠিতে অভিযোগ, প্রান্তিকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেক করলেই দুর্নীতির প্রমাণ মিলবে। মন্ত্রীকে অ্যাডমিট কার্ড পাঠিয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন এমন চ্যাটও নাকি বেরিয়ে আসবে।
এদিকে ২০২৪ এর জানুয়ারি মাসেই মুক্তি পেয়েছে প্রান্তিক চক্রবর্তী পরিচালিত ‘১৯৪৫ : বিহাইন্ড দ্য মাউন্টেনস’। স্বাধীনতা সংগ্রামী পুতলি তামাংয়ের জীবনের উপর নির্ভর করে ছবিতে মুক্তি পায় ২৬ জানুয়ারিতে। এই ছবিতে পুতলির চরিত্রে দেখা যায় রাজন্যাকে। গত বছর রাজন্যার সাথেই বাগদান সেরেছেন প্রান্তিক। এখন এই রকমও অভিযোগ উঠছে যে, দুর্নীতির টাকাতেই ওই সিনেমা বানিয়েছেন প্রান্তিক।
আরও পড়ুন: টানা ৬ ঘণ্টা CBI জেরা শেষে বোমা ফাটালেন দেবরাজ, ঠিক কী বললেন অদিতির স্বামী?
যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রান্তিক। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রান্তিক বলেন, “পাহাড়ের কাহিনি নিয়ে ছবি বানিয়েছি। ওখানকার প্রচুর মানুষ সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন। আমার সাফল্যে ইর্ষান্বিত হয়েই হয়তো কেউ এমন অভিযোগ করেছে।”