বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতবছর আমফানের স্মৃতিকে ফিরিয়ে ফের একবার বাংলার দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াশ বা যশ। আবহাওয়া দপ্তরের অনুমান অনুযায়ী যদিও আমফানের থেকে কিছুটা কমই হতে চলেছে এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব, তবে সতর্ক থাকা একান্ত প্রয়োজন। গত ১০ দিনের মধ্যে ভারতীয় উপকূলে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার আছড়ে পড়ছে ঝড়। এর আগে মহারাষ্ট্র কর্নাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করেছে তাওকটে। এখন যশের আতঙ্কে দিন গুণছে বাংলা ওড়িশার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস মেনে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি।
ঝড়ের কথা মাথায় রেখে একদিকে যেমন উপান্নে কন্ট্রোল রুম খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেমনই ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। সরকারি দপ্তরের জরুরী পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ছুটি ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার থেকেই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শুরু হয়েছে মাইকিং। রবিবার থেকেই সমুদ্রে যেতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
ইন্ডিয়ান মেটিরিওলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট বা আইএমসি জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপ ২৪ মে সকাল থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নিজের শক্তি বাড়িয়ে ক্রমশ একটি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আপাতত যদিও পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে ২৬ তারিখ তা আছড়ে পড়তে পারে বাংলা এবং উড়িষ্যার বিভিন্ন উপকূল এলাকায়।
২৬ এবং ২৭ মে ঘূর্ণিঝড়ের এইমাত্র ক্ষমতার কথা মাথায় রেখেই সর্তকতা জারি করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বর্ধমানে। এছাড়া হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে মঙ্গলবার এবং বুধবার। জানানো হয়েছে, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া দুই মেদিনীপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকাতেও ঝড় বৃষ্টির প্রভাব ক্রমশ বাড়বে। এই চার জেলাতে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে চরম সর্তকতা। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, উত্তর ওড়িশার একাধিক জেলা যেমন বালাসোর, ভদ্রক, কেন্দ্রপাড়া এবং ময়ূরভঞ্জে যথেষ্ট ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই অঞ্চলগুলিতে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। আগামী দিনে এই বৃষ্টির প্রভাব আরো বাড়বে বলেই মত তাদের।
ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও। যশ মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্যকে হাত মিলিয়ে কাজের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ৬৫টি মোকাবিলা বাহিনীর দল তৈরি করেছেন। ২০ টি অতিরিক্ত স্ট্যান্ডবাই টিম পাঠানো হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকাতে। বিভিন্ন অঞ্চলে মজুত রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।