বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বাঙালি হিন্দুরা প্রধানত প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী দেবীর (laxmi devi) সাপ্তাহিক পূজা করে থাকেন। বাড়ির সধবা স্ত্রীলোকেরাই করে থাকেন এই পূজা। স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে পূজোর যোগার করে একমনে লক্ষ্মী ঠাকুরকে ডাকলে, ভগবান তাঁর ভক্তের ডাকে সারা দেন। পূজা শেষে হাতে পুষ্প এবং বিল্লপত্র নিয়ে ‘লক্ষ্মীর পাঁচালী’ পড়তে হয়।
লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় সংসারে আসে সুখ শান্তি এবং ধন রত্ন। সংসারে সুখ শান্তি, ধন রত্ন সকলেই আশা করে। সকলেই চায় পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে থাকতে। সংসারে যেন কোন দিন অভাব প্রবেশ করতে না পারে। সেই কারণে হিন্দু পরিবারে প্রতি বৃহস্পতিবার করে মাতা লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। তবে লক্ষ্মী দেবী বড়ই চঞ্চলা। তিনি এক জায়গায় বেশি দিন থাকেন না। তাই অনেক সময় লক্ষ্মী গণেশ একসঙ্গে পূজা করলে সুখ শান্তি, ধন রত্নের সঙ্গে শুভবুদ্ধিরও উদয় হয়।
লক্ষ্মী হলেন একজন আরাধ্যা হিন্দু দেবী। ভগবান বিষ্ণু পত্নী এই দেবী হলেন ধনসম্পদ, আধ্যাত্মিক সম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। দেবীর বাহন রূপে আমরা প্যাঁচাকে দেখতে পাই। হিন্দু ধর্ম ছাড়াও জৈন স্মারকগুলিতেও লক্ষ্মী দেবীর ছবি দেখা যায়। তবে এই দেবী হিন্দুর গৃহেই বেশি পূজিত হন। বিশেষত দীপাবলির দিন অলক্ষ্মী পূজা ও কোজাগরী পূর্ণিমার দিন।
কথিত আছে এক দোলপূর্ণিমার রাতে বৈকুণ্ঠে গিয়ে নারদ মর্তিবাসীর দুঃখের কথা লক্ষ্মী ও নারায়ণের কাছে বলেন। লক্ষ্মী দেবী বলেন মানুষের কুকর্মের ফলেই তাঁদের আজ এই পরিণতি। কিন্তু লক্ষ্মীদেবী নারদমুনির অনুরোধে মানুষের দুঃখকষ্ট ঘোচাতে মর্ত্যলোকে এলেন লক্ষ্মীব্রত প্রচার করতে। মর্ত্যলোকে এসে দেখলেন অবন্তী নগরে ধনেশ্বর নামে এক ধনী বণিক বাস করতেন। পিতার মৃত্যুর পর তার ছেলেদের মধ্যে বিষয়সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তাঁদের মা আত্মহত্যার করতে যাচ্ছিলেন। তখন লক্ষ্মী দেবী তাকে লক্ষ্মীব্রত করার উপদেশ দিয়ে বুঝিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠান।
এরপর ধনেশ্বরের স্ত্রী নিজের পুত্রবধূদের দিয়ে লক্ষ্মীব্রত করালেন। এবং তারপরই তাদের সংসারের সব দুঃখ দূর হয়ে গেল। এই ভাবে ধীরে ধীরে অবন্তি নগর ছাড়িয়ে সমগ্র বিশ্বে লক্ষ্মী দেবীর মাহাত্ম্য কথা প্রচার হয়ে গেল। আবার লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় মানুষের ভাড়ার কখনও শূণ্য হয় না। তাই সংসারের সুখ শান্তি এবং ধন রত্ন লাভের জন্য লক্ষ্মী দেবীর পূজা করা হয়।