থেমে থাকবেন না রেণু! ডান হাত হারালেও হাসপাতালে বসে বাঁ-হাতেই লেখা শুরু করলেন তিনি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত শনিবার রাতে জীবনের চরমতম দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন কেতুগ্রামের রেণু খাতুন। স্ত্রী নার্সিংয়ের সরকারি চাকরি পেয়ে ছেড়ে চলে যাবে এই আতঙ্কে বন্ধুদের নিয়ে রেণুর হাতের কব্জি কেটে ফেলে নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছিল তাঁর স্বামী। এমতাবস্থায়, দুর্গাপুরের শোভাপুর সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রেণু। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে কেতুগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে রেণুর শ্বশুর ও শাশুড়িকে।

জানা গিয়েছে, সরকারি নার্সিংয়ের চাকরির লিস্টে নাম বেরিয়েছিল রেণুর। তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বন্ধুদের নিয়ে রেণুর ডান হাতের কব্জি কেটে দিয়েছিল অভিযুক্ত স্বামী শের মহম্মদ ও তার দুই বন্ধু। অর্থাৎ স্বামীর নৃশংসতাতেই কার্যত ডান হাত হারিয়েছেন তিনি। যদিও, এই বড় বিপদের সম্মুখীন হয়েও কিছুতেই ভেঙে পড়তে চান না তিনি। বরং, মনের জোরকে সম্বল করেই জীবনে এগিয়ে যেতে চান রেণু।

ডান হাতে কোনো দিনই লিখতে পারবেন না এই “কঠিন” সত্য মেনে নিয়েই এবার তিনি বাঁ হাতে “হাতেখড়ি” নিয়েছেন। এমনকি, ডান হাত বাদ যাওয়ার ঠিক চার দিনের মাথাতেই হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে বাঁ হাত দিয়েই নিজের নাম এবং ঠিকানা লিখে ফেলেছেন রেণু। এভাবেই জেদ এবং মনের জোরকে সম্বল করে তিনি শুরু করতে চলেছেন নতুন পথচলা।

মূলত, রেণুর ইচ্ছে হল তিনি সরকারি নার্সিংয়ের চাকরিই করবেন। এদিকে, ইতিমধ্যে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতর থেকে রেণুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন সহকর্মীরাও। এছাড়াও, এই ঘৃণ্য কাজের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন সবাই। পাশাপাশি, রেণুর সহকর্মীরা জানান তিনি অত্যন্ত ভালো এবং শক্ত মনের মেয়ে।

WhatsApp Image 2022 06 07 at 7.44.50 PM

এই প্রসঙ্গে রেণু নিজে জানিয়েছেন, ‘‘আমার স্বামী ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছিল। ওর দায়িত্ব ছিল জীবনে আমাকে এগিয়ে যাওয়ায় সাহায্য করা। কিন্তু ও উল্টে আমাকে পিছিয়ে দিতে চেয়েছিল। তবে আমি থামার মেয়ে নই। বরং, এখন আমি আরও এগিয়ে যেতে চাই।” এমতাবস্থায়, রেণু স্বাস্থ্য দফতর এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন যাতে তিনি সরকারি চাকরি পেতে পারেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর