নির্বাচনের পরেই অ্যাকশন! হাইকোর্টের একটি রায়েই উড়ল ঘুম, রাজ্যে বাতিল সংরক্ষণ

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত বছর বিহারে (Bihar) নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) সরকার রাজ্যে জাতি গণনা করানোর মাধ্যমে নয়া সংরক্ষণ চালু করেছিল। যেখানে ওই সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধির মাধ্যমে করা হয় ৬৫ শতাংশ। পাশাপাশি, ওই জাতি গণনায় জানা গিয়েছিল যে আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন রাজ্যের ৬৫ শতাংশ মানুষ। এমতাবস্থায়, তাদের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণের পরিমাণ ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কিন্তু এবার, বিহারের তফসিলি, জনজাতি এবং “পিছড়ে” তথা অনগ্রসর এবং “অতি পিছড়ে” তথা অতিশয় অনগ্রসরদের জন্য করা রাজ্য সরকারের নয়া সংরক্ষণ পাটনা হাইকোর্টের তরফে বাতিল করে দেওয়া হল। শুধু তাই নয়, এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ওই সংরক্ষণ যেভাবে কার্যকর করা হয়েছে তা রীতিমতো বেআইনি। জানিয়ে রাখি যে, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের বেশি হওয়া যায় না।

Reservation is cancelled in this state.

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এহেন রায় থাকলেও রাজ্য সরকার কিভাবে তা এড়িয়ে নয়া সংরক্ষণ চালু করল তা নিয়ে উচ্চ আদালত প্রশ্ন তুলেছে। হাইকোর্ট এই মামলায় কোটা বাতিলের কথা জানিয়ে বলেছে, রাজ্য সরকারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা হল নিয়ম বিরুদ্ধ। বিহারের আগে ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীসগড়ের মতো একাধিক রাজ্য সংরক্ষণ ৬৫ শতাংশ করার ক্ষেত্রে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করিয়ে রেখেছে।

আরও পড়ুন: কলকাতা থেকে শুরু করে মুম্বাই! দেশজুড়ে ৬০ হাজার কোটির সম্পত্তি বিক্রির পথে LIC, কি হবে এত টাকা?

তবে, নিয়ম অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রায় এড়িয়ে বাড়তি কোটা লাগু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন। যদিও, বিহার সরকার সেই পথে না হেঁটে রাজ্য মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পাশ করানোর মাধ্যমে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। এদিকে, সংরক্ষণের এহেন নীতি যখন বিহারে কার্যকর হয়েছিল তখন নীতীশ কুমার ছিলেন আরজেডি-র নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক। পাশাপাশি, সংরক্ষণ বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তে লালুপ্রসাদ যাদবের দলেরও সমান যোগদান ছিল।

আরও পড়ুন: অসম্ভব! মাত্র ৯ ঘণ্টায় তৈরি হল গোটা রেল স্টেশন, কোথায় জানেন?

যদিও, নয়া সংরক্ষণ কার্যকরের পর শিবির বদলে ফেলে বিজেপির হাত ধরে ফেলেন জেডিইউ নেতা। জানিয়ে রাখি যে, সদ্য সম্পন্ন হওয়া লোকসভা ভোটে বিহারের রাজনীতিতে নীতীশের দল ভালো পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এই ভালো ফলের পেছনে পিছড়েদের জন্য সংরক্ষণের সুযোগ বাড়ানোর বিষয়টি বড় ভূমিকা পালন করেছে। এদিকে, আগামী বছরের নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে এই সংরক্ষণ নিয়ে জটিলতা কাটাতে না পারলে নীতীশকে নতুন করে বড় ধরণের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর