বাংলাহান্ট ডেস্ক : কথায় আছে শিক্ষার (Doctor) কোনো বয়স হয় না। গোটা জীবনটাই শিক্ষার পিছনে দিয়ে দিলেও আপনি সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন না। এমন অনেক সময় দেখা যায়, একটু বেশি বয়স হয়ে গেলে আমরা পড়াশোনা করতে চাই না। এমনকি এক ক্লাস ফেল করে গেলে পরবর্তীতে বয়সের জন্য অপর ক্লাসে উঠতে চাই না। আবার কেউ যদি একটু বেশি বয়সে পড়াশুনা করেন তখন শুনতে হয় বুড়ো বয়সে পড়াশুনা করে কি লাভ। কিন্তু সত্যি কি শিক্ষা কিংবা জ্ঞান অর্জনের সঠিক কোনো বয়স রয়েছে? আর এবার সকলকে ভুল প্রমাণ করে দিলেন বয়স ৬৪ জয়কিশোর প্রধান। ৬৪ বছর বয়সেই পড়ছেন ডাক্তারি (Doctor)।
৬৪ বছর বয়সে পড়বেন ডাক্তারি (Doctor):
বিষয়টি শুনে অনেকেই ভাবছেন এত বয়সেও কি ডাক্তারি (Doctor) পড়া যায়। হ্যাঁ যায়! আর সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন উড়িষ্যার বাসিন্দা জয় কিশোর প্রধান। জানা গিয়েছে, জয়কিশোর বাবু একসময় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক ম্যানেজার। সেই সাথে তাঁর আরো একটি পরিচয় হবু ডাক্তার। কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তারি (Doctor) পড়বেন।
আরো পড়ুন : এত বড় সাহস! শুধুমাত্র ‘এই’ দোষেই তিন তিনটি ছবি থেকে বের করে দেওয়া হয় মুনমুনকে
দেশের মধ্যে অন্যতম কঠিন পরীক্ষা হচ্ছে নিট পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় পাশ করার জন্য প্রতিনিয়ত পরীক্ষার্থীরা কঠোর থেকে কঠোরতর অধ্যাবসায় করে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায় বছরে পর বছর পড়াশোনা করেও এই পরীক্ষায় পাশ করা যাচ্ছে না। কিন্তু জয় কিশোর বাবু কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে এই পরীক্ষায় পাস করেছেন।
আরো পড়ুন : বজ্রপাত সহ তুমুল বৃষ্টি! কাল ভিজবে দক্ষিণবঙ্গের জেলার পর জেলা: আবহাওয়ার আগাম খবর
তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ব্যাংকে একজন কর্মরত অফিসার হিসেবেই নিযুক্ত ছিলেন। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল একজন ডাক্তার (Doctor) হওয়ার। কিন্তু ছোটবেলায় সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কর্মজীবন এবং সাংসারিক চাপে এসে সেই স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত হতে হয়। যেখানে অবসর নেওয়ার পর অন্যান্য সকলে একটু শান্তির খোঁজে ভ্রমণ করেন কিংবা সংসারে ছেলেমেয়ে স্বামী, স্ত্রীর সঙ্গে অবসর জীবন কাটান। সেখানে জয়কিশোর বাবু একেবারেই অন্য পথে হাঁটলেন। অবসর নেওয়ার পর পরই তিনি কোমর বেঁধে নেমে পড়েন নিটের প্রস্তুতি নিতে। মনে প্রানে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন যেভাবেই হোক এবার ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করতেই হবে। দিন রাত এক করে শুরু হয় তার পড়াশোনা। আর শেষ পর্যন্ত তিনি এই পরীক্ষায় সফল হন।
বিশিষ্ট গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ছাত্র জীবনে একবার ডাক্তারি (Doctor) প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিলেন জয়কিশোর বাবু৷ কিন্তু তখন এই পরীক্ষায় সফল হননি৷ পরবর্তীকালে তিনি পড়াশোনা শেষ করে ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়ে যান। কিন্তু দুচোখে দেখা সেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন তাঁর মনের কোঠায় সুপ্ত হয়ে থেকে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে নিজের দুই মেয়েকে নিট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে দেখে সেই সুপ্ত স্বপ্ন ফের জেগে ওঠে। এমনকি পরীক্ষার জন্য তিনি অনলাইন কোচিংয়েও ভর্তি হন।
আপনাদের জানিয়ে রাখি, বর্তমানে ডাক্তারি (Doctor) প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার কোন বয়স নির্ধারণ করা নেই। যার ফলে সহজেই তিনি এই পরীক্ষায় বসতে পারেন। ২০২০ সালে মহামারীর সময় তিনি অবশেষে নিট পাস করেন৷ এরপর বীর সুন্দর সাঁই ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পান৷ সংসার সামলে জয়কিশোর বাবুর এমন পরিশ্রম সত্যি কুর্নিশ জানানোর মতো। আজ তার এই জেদ এবং স্বপ্ন আরো একবার প্রমাণ করে দিল শিক্ষার কোন বয়স হয় না। বর্তমান যুগে যারা বয়সের দোহাই দিয়ে শিক্ষা থেকে পিছিয়ে যান সেটা শুধু অজুহাত মাত্র।