বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। পরবর্তীতে জানা যায়, ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়েছেন তিনি। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ৮ আগস্ট মধ্যরাতে হাসপাতালের চার দেওয়ালের মধ্যে কী হয়েছে সেটা এখনও ধোঁয়াশা (RG Kar Case)। এবার ‘সেই রাত’ নিয়ে মুখ খুললেন এক ব্যক্তি। সেই রাতে আরজি করে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
এতদিনে মুখ খুললেন ‘সেই রাতে’র সাক্ষী (RG Kar Case)!
৮ আগস্ট আরজি করে (RG Kar Hospital) চিকিৎসাধীন ছিলেন মিঠু দাস। চারতলার যে সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ, তার ঠিক উল্টোদিকেই স্লিপ স্টাডি রুম। ঘটনার রাত ১টা অবধি সেখানেই ছিলেন চিকিৎসাধীন মিঠু দাস। তাঁর ছেলে বলেন, নার্স, নিরাপত্তারক্ষী, স্বাস্থ্যকর্মী সহ অন্তত ৭ জন সেদিন রাত ১টা অবধি জেগে ছিলেন। রাত ১২:৩০ অবধি মিঠুর স্লিপ স্টাডি পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেই কারণেই অনেকে সেখানে ছিলেন।
- ‘১২:৩০ নাগাদ ডাক্তারবাবু মেশিন খুলে দেন’
মিঠুর ছেলে বলেন, ‘স্যার বলেছিলেন, সন্ধ্যা থেকে পরীক্ষা করা হবে। ৬:৫০ নাগাদ পরীক্ষা শুরু হয়। মা শুয়ে পড়ে। ডাক্তারবাবু মেশিন লাগিয়ে বলেছিলেন, মা যদি নড়াচড়া করে, মেশিন খুলে যায়, তাহলে আমি এসে সেটা ঠিক করে দেব। ১২:১৫ নাগাদ থেকে আমি দুই-তিনবার স্যারকে ফোন করি। উনি ফোন ধরেননি। এরপর ১২:৩০ নাগাদ ডাক্তারবাবু এসে মেশিন খুলে দেন। এরপর মা-কে বেডে নিয়ে চলে যাই’।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগেই ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা! জেলায় জেলায় শীর্ষ আধিকারিকদের পাঠাচ্ছে নবান্ন! বাড়ছে উদ্বেগ
সেমিনার রুমের অবস্থা তখন কেমন ছিল (RG Kar Case)? উত্তরে মিঠুর ছেলে সায়ন বলেন, ‘দরজা ভেজানো ছিল, ঘর একদম ফাঁকা। কেউ ছিলেন না। বাইরের দিকে দু’জন সিস্টার দিদি বসেছিলেন। স্লিপ স্টাডির পাশেই আবার চেস্ট ডিপার্টমেন্টের আইসিইউ রুম। ওই ঘরেও লোক ছিল, দরজা বন্ধ ছিল। চেস্ট বিভাগের আইসিইউর সামনে ওয়ার্ডে যারা কাজ করেন, ওনারা চেয়ারে বসে ছিলেন’।
সায়ন জানান, মিঠুদেবীকে নিয়ে তিনি যখন বেরোচ্ছেন, সেই সময় ঘরের বাইরে বসে থাকা দু’জন সিস্টার দিদি জিজ্ঞেস করেন, আপনি এদিকে কোথায় ছিলেন? বেড নম্বরও জানতে চান তাঁরা। উত্তরে সায়ন জানান, তাঁর মা ভর্তি ছিল। বহিরাগত কাউকে দেখেননি বলে জানিয়েছেন সায়ন। একইসঙ্গে জানান, ওখানকার স্টাফ, সিস্টার দিদি, তিনি এবং তাঁর মা ছাড়া একজন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করেন, হয়ে গিয়েছে?
মিঠুদেবীর ছেলে বলেন, ‘মাঝে স্লিপ স্টাডি চলাকালীন ওদের ইউনিটের একজন এসেছিলেন। তবে ঘর অন্ধকার থাকার মুখ দেখা যায়নি। পুরুষ। কোনও ইন্টার্ন আসেননি’। একইসঙ্গে সায়ন বলেন, ‘ডক্টর অর্ক সেন ছাড়া চেস্ট বিভাগের আরও একজন চিকিৎসক এসেছিলেন। তিনি ডক্টর অর্ক সেনের খোঁজেই এসেছিলেন’।
আরও পড়ুনঃ ২৫ নভেম্বর…! আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়! তোলপাড় করা নির্দেশ হাইকোর্টের
এদিকে সায়ন মুখ খুলতেই ফের একবার ৮ আগস্টের রাত নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, আরজি করের চেস্ট বিভাগের পিজিটিরা দাবি করেছিলেন, ১১:৩০টার মধ্যে তাঁরা খাওয়াদাওয়া সেরে নিজেদের মতো বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। নার্সিং স্টাফরা বলেছিলেন, সেই রাতে কেউ সেমিনার রুম চত্বরে ছিলেন না (RG Kar Case)। তবে মিঠুদেবীর ছেলে দাবি, রাত ১টা অবধি ওই চত্বরে নার্সিং স্টাফ, স্বাস্থ্যকর্মী, নিরাপত্তারক্ষী সহ অন্তত ৭-৮ জন ছিলেন। তাঁদের কেউই কি কিছুই দেখেনি?
এখানেই শেষ নয়! স্লিপ স্টাডি পরীক্ষা সাধারণত রাতভর চলে। তবে মিঠুদেবীর ক্ষেত্রে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ১২:৩০টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেল? পিজিটি অর্ক সেন কেন সন্ধ্যা থেকেই পরীক্ষা করলেন? একাধিকবার ফোন করেও কেন তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না? এখন এমনই নানান প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে।