বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেখতে দেখতে চার মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত ন্যায় বিচার পেল না আরজিকর (RG Kar Case) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসক। এরই মধ্যে তিলোত্তমা খুনের মামলায় এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে ডিএনএ রিপোর্ট। এই রিপোর্ট থেকেই জানা যাচ্ছে, নমুনায় পাঁচজন পুরুষ এবং দুজন নারীর উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এই দুই নারীর মধ্যে একজন তিলোত্তমা আর পুরুষদের মধ্যে একজন অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। যদিও এখনও অন্ধকারে আর একজন নারী সহ ৪ জন পুরুষ।
আরজিকর (RG Kar Case) কাণ্ডে নতুন মোড়!
এরা প্রত্যেকেই তিলোত্তমার নির্মম ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। এই চার সন্দেহভাজন পুরুষ এবং একজন নারী আসলে কারা? সম্প্রতি এই হত্যার মামলায় (RG Kar Case) ডিএনএ রিপোর্টে মিলেছে এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্যাম্পল কন্টামিনেটেড অর্থাৎ নির্যাতিতার শরীর থেকে যে ডিএনএ মিলেছে তাতে সঞ্জয় রায় এবং তরুণীর নিজের ডিএনএ ছাড়াও বাকি আরও পাঁচজনের ডিএনএ মিলেছে।
তারা আসলে কারা? কিংবা এদের ডিএনএ এল কোথা থেকে? তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ব্যাপক জল্পনা। তবে এই নমুনা দেখে দাবি করা হচ্ছে নির্যাতিতার শরীর থেকে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল সেখানে আরও মানুষের দেহরসের উপস্থিতি ছিল। এখানে বলে রাখা ভালো, এই নমুনা সংগ্রহ করেছিল স্টেট ফরেনসিক ল্যাবরেটরি। আর তা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিয়েছে সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরি।
আর এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি এতটাই স্পেশালাইজড হয়ে থাকে যে এখানে এক নমুনার সাথে অন্য নমুনা মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা কার্যত শূন্য। যার ফলে অপরাধ স্থলে একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতির জল্পনা আরও প্রবল হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাকি অপরাধী কারা? তাদের খুঁজে বার করা সত্যিই কঠিন। কিন্তু তা অসম্ভব নয় একেবারেই। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দাবি আসল দোষীদের খুঁজে বের করার বিষয়টি সময় সাপেক্ষ হলেও অসম্ভব নয়।
এই অজানা অপরাধীদের কিভাবে খুঁজে বার করা যাবে? তার জন্য প্রথমত ধরে নেওয়া যেতে পারে যে বাইরের যমুনার সাথে মিশে গিয়েছে। তাহলে এক্ষেত্রে ল্যাবের কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। কারণ তারাই ওই নমুনা নাড়াচাড়া করেছিল। তাই এক্ষেত্রে ওই কর্মচারীদের ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখলেই প্রমাণ হয়ে যাবে ওখানে কোনো কন্টামিনেশন হয়েছে কিনা! কিন্তু যদি তাদের সাথে নমুনা না মেলে তাহলে নিশ্চিত হওয়া যাবে ওইদিন ক্রাইম সীনে আরও অপরাধী উপস্থিত ছিল। আর এটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে ওই সমস্ত অপরাধীদের বাঁচানোর জন্যই তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জরিমানা থেকেই কলকাতার পুরসভার লাভ হল ১৩ লক্ষ টাকা! ভেজালে ভরা হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবার
তাই ৯আগস্ট যে বা যারা হাসপাতালে ছিল এবং বাইরে থেকে এসেছিল তাদের প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষা করে দেখলে বিষয়টা আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে। অর্থাৎ ডি এন এ রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তদন্ত করলে সমস্ত অপরাধি ধরা পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে প্রশ্ন উঠছে সিবিআই-এর তদন্তের গতি নিয়ে। ডি এন এ রিপোর্টে যে চারজন পুরুষ এবং একজন মহিলার নমুনা মিলেছে তারা এই মুহূর্তে হাসপাতালে (RG Kar Case) বাইরে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই পাঁচজনের হাসপাতালের লোক হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।
প্রসঙ্গত ইতিমধ্যেই সিএফএসএল রিপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য থেকে ক্রাইম সিন বদলানোর দাবি করা হচ্ছে। আরজিকর কাণ্ডের শুরু থেকেই অনেক জল্পনা তৈরী হয়েছিল। সে সময় অনেকেই দাবি করেছিলেন তিলোত্তমাকে ডক্টর রুমের পাশে থাকা বাথরুমে খুন করে তার দেহ সেমিনার রুমে ফেলে রাখা হয়েছিল। সেইসাথে দাবি করা হয়েছিল ওই ঘটনার সাথে কমপক্ষে চার পাঁচ জন যুক্ত ছিল। এবার ডিএনএ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই সেই সম্ভাবনাই প্রবল হয়ে উঠছে। তবে এখন নির্যাতিতার মৃত্যুর তদন্তের রহস্য উদঘাটনের বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে সিবিআই তদন্তের ওপরে।