বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ খুনের ঘটনায় শিউড়ে উঠেছে গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য হাতে পেয়েছে সিবিআই। এবার যেমন জানা যাচ্ছে, গত আগস্ট মাসে হওয়া এই ধর্ষণ হত্যাকাণ্ড (RG Kar Case) একেবারেই আকস্মিক কোনও ঘটনা নয়। বরং দীর্ঘ এক পরিকল্পনার ফল! একটি নামি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে।
প্রতিবাদী চিকিৎসকের খুনের (RG Kar Case) ছক সাজিয়েছিলেন সন্দীপ?
ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই শিরোনামে রয়েছেন আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। ধর্ষণ খুন এবং আর্থিক দুর্নীতি, দুই মামলাতেই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। এবার তাঁকে নিয়েই সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর খবর! একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাসপাতালের অন্দরে হওয়া নানান অন্যায় এবং অনিয়মের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন ওই তরুণী চিকিৎসক। যে কারণে সন্দীপের (Sandip Ghosh) চোখের ‘বিষ’ হয়ে ওঠেন। আর সেই জন্যই অকালে প্রাণ হারাতে হয় তাঁকে।
ওই প্রতিবেদন বলছে, আরজি করে রোগীদের ফ্রি-তে যে ওষুধ দেওয়া হতো তা ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। এই বিষয়ে বেশ কিছু সিনিয়র চিকিৎসককে অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণী। তাঁরা প্রত্যেকেই আবার ছিলেন সন্দীপ ঘনিষ্ঠ। ফলে ব্যাপারটা তাঁর কান অবধি পৌঁছতে বেশি সময় লাগেনি। একইসঙ্গে আরজি করের (RG Kar Hospital) পড়াশোনার ধরণ নিয়েও বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছিলেন নির্যাতিতা।
আরও পড়ুনঃ দেরি নয়, পুজোর আগেই কাজ শুরু! জেলাশাসকদের থেকে এবার কোন রিপোর্ট চাইল নবান্ন?
ঠিকভাবে ক্লাস না করানো থেকে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের গবেষণাপত্র সন্দীপ ঘনিষ্ঠদের দিয়ে দিতে বাধ্য করা- একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন ওই তরুণী। অভিযোগ, নির্যাতিতার গবেষণাপত্রও একইভাবে সন্দীপের এক ‘খাস লোক’কে দিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল (RG Kar Case)। হাসপাতালের পিজিটি পড়ুয়াদের থেকে সিবিআই গোয়েন্দারা নাকি জানতে পেরেছেন, ওই ছাত্র ছিলেন সন্দীপের ‘রাইট হ্যান্ড’! এসব কারণে ক্রমেই সন্দীপের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন ওই তরুণী চিকিৎসক।
তদন্তে নাকি জানা গিয়েছে, ওই তরুণী ডাক্তারকে যে কোনও ভাবে আটকানোর কথা নিজের কিছু ‘ঘনিষ্ঠ’ চিকিৎসকদের বলেছিলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। জানা যাচ্ছে, সন্দীপের থেকে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি নাকি প্রথমে এড়িয়ে যান। তবে পরবর্তীতে পুরনো ডিজিটাল নথি ঘেঁটে নাকি এই সম্বন্ধিত ‘মেসেজ’ উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। এরপর ফের প্রশ্ন করতেই নাকি নিম্নমানের ওষুধ নিয়ে ওই তরুণী চিকিৎসকের প্রতিবাদের বিষয়টা স্বীকার করে নেন সন্দীপ।
তদন্তে নাকি জানা গিয়েছে, মুখ বন্ধ রাখতে কার্যত ‘হুমকি’ দেওয়া হচ্ছিল ওই তরুণী ডাক্তারকে। তবে তিনি কিছুতেই দমতে রাজি ছিলেন না। সেই কারণেই তাঁকে প্রাণে শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত করা হয় বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। কেন ওই তরুণী ডাক্তারকে খুন করা হল? এই বিষয়ে নাকি আরজি করের একাধিক চিকিৎসক, কর্মীকে জিজ্ঞাসাবদ করেছে সিবিআই। সেখানে নাকি সকলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যা ঘটেছে, তার মাস্টারমাইন্ড আদতে সন্দীপ (RG Kar Case)! হাসপাতালের নানান দুর্নীতি কথা জেনে যাওয়াতেই তাঁকে শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত করা হয়!
এখানেই শেষ নয়! কোথায় কীভাবে ওই ডাক্তারকে খুন করা হবে সেই বিষয়ে নাকি সন্দীপ ছাড়াও আরও ৪ জন ডাক্তার জানতেন (RG Kar Case)! স্বাভাবিকভাবেই এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সিবিআই তদন্তে যেভাবে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে তাতে এই ঘটনার তদন্ত আগামীদিনে কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।