আরজি করের নির্যাতিতার দেহে অন্য মহিলার DNA কীভাবে? ‘ফাঁস’ করলেন খোদ বিচারক

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) সঞ্জয় রায়ের শাস্তি ঘোষণা করেছে শিয়ালদহ আদালত। আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে ধর্ষণ খুনের এই মামলা ঘিরে রহস্য এখনও কাটেনি। আগেই জানা গিয়েছিল, নির্যাতিতার দেহে অন্য একজন মহিলার ডিএনএ পাওয়া গিয়েছে। সেটা কোথা থেকে এল? এবার শিয়ালদহ আদালতের (Sealdah Court) রায়ের কপিতে সেটা ব্যাখ্যা করা হল।

তিলোত্তমার দেহে অন্য মহিলার ডিএনএ এল কীভাবে (RG Kar Case)?

নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ের কপিতে বলা হয়েছে, নির্যাতিতার দেহে যে ডিএনএ নমুনা পাওয়া গিয়েছে, সেটার সঙ্গে সঞ্জয়ের নমুনা মিলে গিয়েছে। এর পাশাপাশি তিলোত্তমার দেহে অন্য একজন মহিলার খুব অল্প ডিএনএ পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতে নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়, ঘটনাস্থলে অন্য কেউ ছিল। তবে শিয়ালদহ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, যা তথ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাতে আরজি কর কাণ্ডে শুধুমাত্র সঞ্জয় (Sanjay Roy) জড়িত ছিল। বাকি কারোর যুক্ত থাকার সম্ভাবনা খুব সহজেই খারিজ করে দেওয়া যায়।

আরজি করের নির্যাতিতার দেহে আরেকজন মহিলার ডিএনএ কীভাবে পাওয়া গিয়েছে সেটাও শিয়ালদহ আদালতের রায়ের কপিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তিলোত্তমার স্তনবৃন্ত থেকে সংগ্রহ করা নমুনার সঙ্গে সঞ্জয়ের নমুনা মিলে গিয়েছে। পাশাপাশি অন্য আরেকজন মহিলার ডিএনএ যে পাওয়া গিয়েছে, সেটার ‘রহস্যভেদ’ করার জন্য বিচারক অনির্বাণ দাস (Justice Anirban Das) সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের ভিডিও খতিয়ে দেখেন।

আরও পড়ুনঃ দ্রুত শুনানি শেষ করতে হবে! বেআইনি নির্মাণ রুখতে বিরাট পদক্ষেপ! কড়া নির্দেশ দিলেন মেয়র

বিচারক জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, মেঝেতে অন্য মহিলাদের মৃতদেহ রয়েছে। এছাড়া যে ট্রে-তে আরজি করের (RG Kar Case) নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল, সেটি জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। নমুনা সংগ্রহ করার আগে অ্যাপ্রন কিংবা গ্লাভস পরিবর্তন করেননি ডোম। এছাড়া তিলোত্তমার ময়নাতদন্তের জন্য ব্যবহৃত ছুরি, কাঁচিও জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। সব মিলিয়ে, ময়নাতদন্তের সময় নির্দিষ্ট বিধি মেনে চলা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিচারক।

RG Kar Case

জানা যাচ্ছে, বিচারক জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ বিধি মেনে ময়নাতদন্ত করার মতো পরিকাঠামো নেই। এই ধরণের পরিকাঠামোর মধ্যেই চিকিৎসকদের ময়নাতদন্ত করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তবে ওই ভিডিও থেকেই পরিষ্কার, সংগ্রহ করা নমুনা দূষিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তার জন্য ডাক্তারদের ঘাড়ে দোষ চাপানো উচিত নয় বলে মনে করেছেন তিনি।

আরজি কর মামলার (RG Kar Case) রায়ের কপিতে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ও সায়েন্টিস্ট-সি (বায়োলজি) সোমা রায় নমুনা দূষিত হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন বলে সওয়াল করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে নির্যাতিতার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়, অন্য কাউকে আড়াল করার জন্য জেনেবুঝে নমুনা দূষিত করা হয়। তবে সব দিক খতিয়ে দেখার পর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার পরিবার যে অভিযোগ তুলেছিল সেটা গ্রহণ করছেন না বলে জানান বিচারক। একইসঙ্গে ধর্ষণ খুন কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায় জড়িত ছিল না, সেই যুক্তিও খারিজ করে দিচ্ছেন।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর