বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ পার! গত সোমবার আরজি কর ধর্ষণ খুন কাণ্ডে (RG Kar Case) সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করেছিল শিয়ালদহ আদালত (Sealdah Court)। অনেকেই ভেবেছিলেন, তাঁকে হয়তো ফাঁসির শাস্তি দেওয়া হবে। তবে তেমনটা হয়নি। বিচারক তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর থেকেই চর্চার কেন্দ্রে রয়েছে এই রায়। বিচারক অনির্বাণ দাসের (Judge Anirban Das) ১৭২ পাতার রায়ে কী বলা হয়েছে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
আরজি কর ধর্ষণ খুনের (RG Kar Case) নেপথ্যে এক বোতল বিয়ার?
বিচারক দাস নিজের রায়ে জানিয়েছেন, সঞ্জয় রায়কে মোট ১০৪টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরে সহমত হলেও ধর্ষণ খুন সংক্রান্ত প্রশ্নে এই প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ার কোনও জবাব দেননি। বিচারক আরও লিখেছেন, সঞ্জয় কেন তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ খুন করলেন তার কোনও স্পষ্ট কারণ নেই। এমনকি ঠিক কোন সময়ে তিলোত্তমাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ নেই।
আরজি করের (RG Kar Case) নিহত তরুণী চিকিৎসক এবং সঞ্জয় রায় আগে থেকে একে অপরকে চিনতেন না। ফলে এই ধর্ষণ খুনের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত, এই তত্ত্ব খাটে না। এই আবহে মাথাচাড়া দিয়েছে একটি প্রশ্ন। তাহলে কি মদ্যপানের রাসায়নিক বিক্রিয়া ও যৌন লালসার জন্যই এই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন এই প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ার?
আরও পড়ুনঃ চাপে তৃণমূল-BJP? ছাব্বিশের ভোটের আগে আত্মপ্রকাশ বাংলা একতা মঞ্চের! উদ্দেশ্য জানেন?
জানা যাচ্ছে, সঞ্জয় (Sanjay Roy) নিজেই জানিয়েছেন, গত ৮ আগস্ট রাতে এক বন্ধুর সঙ্গে চেতলার এক যৌনপল্লীতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বিয়ার খেয়েছিলেন, তবে যৌন সঙ্গম করেননি। এমনটা তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করেছেন সঞ্জয়। এরপর মদ্যপ অবস্থাতেই আরজি করে আসেন।
বিচারক দাসের রায়ে বলা হয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, অকুস্থলে সঞ্জয় প্রবেশ করছেন। তার আগে কিংবা পরে কারোর আনাগোনার কথা এখানে উল্লেখ নেই। এদিকে একজন সাক্ষী জানিয়েছিলেন, অতীতেও ওই সেমিনার রুমের আশেপাশে মাতালের আনাগোনা দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে বিভাগীয় প্রধানকে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এছাড়া ঘটনার রাতে সেমিনার রুমের পাশেই একজন ব্যক্তিতে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। তাঁকে তাড়িয়েও দেওয়া হয়। এখান থেকেই অকুস্থলে সঞ্জয়ের উপস্থিতির সম্ভাবনা আরও জোরালো হচ্ছে।
এই আবহে প্রশ্ন, আরজি করের ধর্ষণ খুনের ঘটনা (RG Kar Case) কি তাহলে উদ্দেশ্যহীন অপরাধ? বিচারক অনির্বাণ দাস নিজের রায়ে লিখেছেন, অতীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে উদ্দেশ্যহীনভাবে অপরাধ করেছেন অপরাধী। এই যুক্তির সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্টের বেশ কিছু রায় ও পর্যবেক্ষণের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।