বিচারকের কথা শুনেই চোখে জল! নির্যাতিতার মা ক্ষমা চেয়ে বললেন, ‘আদালতে কি ভাবে কথা বলতে হয় জানি না’

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ন্যায় বিচার পেলেন না আরজি কর (RG Kar) কাণ্ডের, নির্যাতিতা তরুণী। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর পর ক্যালেন্ডারে তারিখ বদলালেও  দিন বদলাচ্ছে না তিলোত্তমার অসহায় মা-বাবার। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুযন্ত্রণা বুকে নিয়েই মাসের পর মাস আদালতের দরজার-দরজায় ঘুরছেন তাঁরা। আরজি কর কান্ডের শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার পরিবার। একাধিকবার তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন সিবিআই-এর তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে।

আদালতে কেন কেঁদে ফেললেন RG Kar নির্যাতিতার মা?

আরজি কর (RG Kar) ধর্ষণ খুনের মামলায় শিয়ালদহ অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কিত স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেখানে তাঁরা জানিয়েছেন জামিনে মুক্ত টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডলের সিম কার্ড এখনই ফেরত না দেওয়ার কারণ। আদালতে সিবিআই এপ্রসঙ্গে জানিয়েছে প্রাক্তন ওসির সিম কার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তের অগ্রগতির জন্য ওই সিম কার্ড অনেক সাহায্য করতে পারে। তাই এখনই ওই সিম কার্ড ফেরত দেওয়া হবে না। একই সাথে ওই রিপোর্টে সিবিআই জানিয়েছে খুব দ্রুত সাপলিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।

খানিক হতাশার সাথেই আদালতে দাঁড়িয়ে এদিন নির্যাতিতার বাবা বললেন, ‘সাত মাস তদন্ত চলছে। কলকাতা পুলিশ প্রথম পাঁচদিন তদন্ত করেছিল।  আমাদের সাথে তারমধ্যে একদিন যোগাযোগ করে তদন্তের বিষয়ে জানানো হয়েছিল। সিবিআইয়ের তরফে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। সাত মাসে কী তদন্ত হয়েছে, আমরা জানতে পারিনি। ভিতরেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি আমাদের। তদন্তকারী আধিকারিক ১০ নভেম্বর সমন দিতে এসেছিলেন। আমরা গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু কোনও অগ্রগতি রিপোর্ট দেওয়া হয়নি।’

আরও পড়ুন: ‘জামাকাপড় খুলে রাস্তায় ঘোরানো উচিত!’ পানাগড়ে নৃত্যশিল্পীর মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসে উঠলেন কুণাল

তিলোত্তমার বাবার কথা শুনে বিচারক এদিন বললেন, ‘নিজেদের ব্রাত্য ভাববেন না।’ তখন নির্যাতিতার বাবা জানান, পরিবারের অন্তত একজন ভিতরে থাকতে পারত। তখন বিচারক তাঁকে ধৈর্য্য ধরতে বলেন। নির্যাতিতার বাবা তখন বলেন, ‘ধৈর্য্য আছে। সাত মাস অপেক্ষা করছি। আদালতের ওপর আস্থা আছে।’

বিচারক এরপর নির্যাতিতার পরিবারকে সিবিআই ও কলকাতা পুলিশের বেশ কিছু নিয়মের কথা জানান। তাঁর কথায়, ‘কলকাতা পুলিশ ও সিবিআইয়ের নিয়ম আছে। তারা কিছু স্টেজে আসার পর তথ‍্য জানায়। তাই আপনারাও তথ্য জানতে পারবেন। সিবিআই কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করল, সেই বিষয়ে নাও জানাতে পারে। এমনকি ফরেন্সিক রিপোর্ট বা গুরুত্বপূর্ণ রিপোটের বিষয়ে নাও জানাতে পারে।’

Several program schedules on RG Kar case victim doctors birthday

তিলোত্তমার মা তখন আদালতে দাঁড়িয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠেন। প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি।’ তখনই তাঁকে বিচারক বলেন, ‘আপনি ক্ষমা চাইবেন না।’ তিলোত্তমার মা তখন চোখে জল নিয়ে বলেন, ‘আদালতে কি ভাবে কথা বলতে হয় জানি না। আমার একটা মাত্র মেয়ে অন ডিউটি ডাক্তার ছিলেন। তার সঙ্গে এমন ঘটল, কী ভাবে ঘটল জানতে চাইছি।’ তখন আদালতে উপস্থিত নির্যাতিতার আইনজীবী বলেন, ‘ওঁরা ভীষণ চিন্তিত। এখন ওঁদের মানসিক অবস্থা কেমন তা বুঝতেই পারছেন!’
Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর