ওষুধের মান নিয়ে সন্দীপের কাছে অভিযোগ নির্যাতিতার! তারপর … আরজি কর কাণ্ডে তোলপাড় করা মোড়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর পর সামনে এসেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এবার প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। জানা যাচ্ছে, ওষুধের নিম্নমান নিয়ে সন্দীপের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা (RG Kar Case)। যে কারণে তরুণী চিকিৎসককে পাল্টা ‘হুঁশিয়ারি’ দেন তিনি।

  • শিরোনামে ওষুধ-দুর্নীতি (RG Kar Case)!

আরজি কর কাণ্ডের পর চর্চার কেন্দ্রে চলে এসেছে ওষুধ দুর্নীতি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এর সঙ্গে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন জড়িয়ে রয়েছে। আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) নির্যাতিতাও ওষুধের খারাপ মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে হাসপাতাল সূত্র উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে বারবার এই নিয়ে সাবধান করলেও তিন চুপ থাকেননি।

   
  • তরুণী চিকিৎসককে ‘হুঁশিয়ারি’ সন্দীপের!

দুই সতীর্থকে সঙ্গে নিয়ে নাকি সোজা চলে গিয়েছিলেন অধ্যক্ষের ঘরে। বলেন, ওষুধের কার্যকারিতা এবং মান দু’টোই তলানিতে। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। অভিযোগ, সন্দীপ (Sandip Ghosh) তাঁকে পাল্টা বলেন, এত বেশি কথা বললে তাঁর আর পাশ করা হবে না। তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে সন্দীপের যখন এই কথা হয়েছিল, সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে আরও দু’জন কর্তা।

আরও পড়ুনঃ ভাত, গরম গরম মাটন কষা, আর…! অনুব্রত ফেরার আনন্দে পিকনিক, ফুল মেনু শুনলে চমকে যাবেন

ওই দু’জনের মধ্যে একজন সম্প্রতি সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, বিগত কয়েক মাসে হাসপাতালের নানান বিভাগ থেকে চিকিৎসক, নার্সরা ওষুধের (Medicine) মান নিয়ে প্রচুর অভিযোগ করেছেন। ওষুধের কার্যকারিতা না থাকা, বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু- অধ্যক্ষের কাছে এমন নানান অভিযোগ জমা পড়েছিল। তবে কোনও অভিযোগকেই বিশেষ ‘পাত্তা’ দেওয়া হয়নি বলে খবর।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে হাসপাতাল সূত্র উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, প্লাস্টিক সার্জারি এবং জেনারেল সার্জারি বিভাগের কিছু ডাক্তার কয়েকদিন আগে রোগী মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলেছিলেন (RG Kar Case)। তবে সেই বিষয়টাও ধামাচাপা পড়ে যায়! একজন শল্যচিকিৎসক বলেন, ‘প্রাণে বাঁচতে হবে তো! ওষুধ নিয়ে বেশি মুখ খোলা হলে প্রাণে শেষ করে দেওয়া হবে, এমন হুমকি দিয়ে ফোন অবধি এসেছে’।

RG Kar Case

ডাক্তারদের একাংশের কথায়, এই ধরণের নিম্নমানের ওষুধ মূলত এমন কিছু ক্ষেত্রে হয় যার মান চট করে বোঝা যায় না। প্যারাসিটামল, লিভারের ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, স্নায়ুর ওষুধের ক্ষেত্রে এই প্রকারের অনিয়ম বেশি হয় বলে দাবি তাঁদের। এদিকে আবার জানা যাচ্ছে, ওষুধ সম্বন্ধিত অধিকাংশ অভিযোগই স্বাস্থ্য ভবন (Swasthya Bhaban) অবধি পৌঁছয়। এরপর? এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘যখন কোনও অভিযোগ এসেছে, সেই ওষুধের পরীক্ষা করিয়েছি। দরকারে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়েছি। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের ল্যাবে ওষুধের পরীক্ষা হয়। এছাড়া আমরা এনএবিএল স্বীকৃত কিছু ল্যাবের সাহায্য নিই’।

এখানেই না থেমে স্বাস্থ্য সচিব জানান, বছর খানেকের মধ্যে তাঁদের নিজস্ব অত্যাধুনিক ল্যাব তৈরি হতে চলেছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘ওষুধ বা স্যালাইন নিয়ে যা যা অভিযোগ এসেছে, আমরা পরীক্ষা করিয়েছি। সেই সকল পরীক্ষার রিপোর্টে অধিকাংশ সময়েই কিছু মেলেনি। তাহলে আর কী করণীয় থাকতে পারে?’ এদিকে ওষুধ দুর্নীতির এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) আরও কোনও নতুন দিক উন্মোচিত হয় কিনা সেটাই দেখার।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর