বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ৮ আগস্ট আরজি করের (RG Kar Case) চার দেওয়ালের ভেতর ঠিক কী ঘটেছিল তা আজও ধোঁয়াশা। সোমবার সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy) সাজা ঘোষণা হলেও অধরা থেকে গিয়েছে বহু প্রশ্নের উত্তর। সেই সঙ্গেই মামলার রায়ের কপি থেকে জানা গিয়েছে বেশ কিছু তথ্য। ঠিক কোন সময় মৃত্যু হয়েছিল তিলোত্তমার? সেই সময় কি আরজি করে (RG Kar Hospital) ছিলেন দোষী সঞ্জয় রায়? শিয়ালদহ আদালতের বিচারক নিজের রায়ের কপিতে তুলে ধরেছেন সেকথা।
কখন মৃত্যু হয়েছিল আরজি করের নির্যাতিতার (RG Kar Case)?
আরজি কর মামলার রায়ের কপি থেকে জানা গিয়েছে, শুনানি চলাকালীন চিকিৎসক অপূর্ব দাস আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ময়নাতদন্তের সময় তিলোত্তমার পাকস্থলী থেকে ১৮৫ গ্রাম আংশিক হজম হওয়া খাবার পাওয়া গিয়েছিল। সেসব বিশ্লেষণ করে তিনি জানিয়েছিলেন, ময়নাতদন্ত হওয়ার ১৯ ঘণ্টা আগে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট সন্ধ্যা ৬:১০ থেকে ৭:১০ মিনিটের মধ্যে তিলোত্তমার ময়নাতদন্ত হয়েছিল।
জানা যাচ্ছে, এই প্রসঙ্গে দিল্লি এইমসের একজন বিশেশজ্ঞ দাবি করেছিলেন, প্রথম গ্রাস মুখে দেওয়ার ১০ মিনিট পর থেকেই পাকস্থলী ফাঁকা হওয়ার কাজ শুরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে স্বল্প পরিমাণ খাবার বের হতে ১-২ ঘণ্টা, মাঝারি খাবার বের হতে ৩-৪ ঘণ্টা এবং ভারী খাবার বের হতে ৫-৮ ঘণ্টা সময় লাগে। কার্বোহাইড্রেট পাকস্থলী থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায়। প্রোটিন বের হতে একটু বেশি সময় লাগে এবং ফ্যাট বের হতে সবচেয়ে বেশি সময় নেয়। বিশেষজ্ঞের মতে, মিশ্র খাবার পুরোপুরি পাকস্থলী থেকে বের হতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় নেয়।
আরও পড়ুনঃ ডায়মন্ড হারবারে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা! অবস্থা আশঙ্কাজনক! ভর্তি কলকাতার হাসপাতালে
সেক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে, গত ৮ আগস্ট ভোর ৪:৪৫ মিনিট থেকে ৫:১৫ মিনিটের মধ্যে আরজি করের (RG Kar Case) নির্যাতিতার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এদিকে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, ঘটনার রাত ৪টে ৩ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে সেখানে প্রবেশ করেছিলেন দোষী সঞ্জয় রায়। ৪টে ৩১ মিনিট ৪০ সেকেন্ড নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান। অর্থাৎ নির্যাতিতার মৃত্যুর সম্ভাব্য সময়ের ১৫ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট আগেই ঘটনাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়।
এদিকে ঘটনার রাতে তিলোত্তমার সঙ্গে ডিনার করা চিকিৎসক গোলাম আজম ও অর্ক সেন দাবি করেছিলেন, সেদিন রাত সাড়ে ১১টার আশেপাশে তাঁরা ডিনার শুরু করেছিলেন। গোলামের দাবি ছিল, ১২:৪৫ মিনিট নাগাদ তাঁদের খাওয়া শেষ হয়েছিল। অন্যদিকে অর্ক দাবি করেন, ডিনার শেষ হয়েছিল রাত ১:১৫ মিনিট নাগাদ। অর্থাৎ দু’জনের বয়ানে এক্ষেত্রে অসঙ্গতি রয়েছে।
অন্যদিকে আরজি কর-দোষী (RG Kar Case) সঞ্জয় দাবি করেছিলেন, ৮ আগস্ট ভোর ৪টের আশেপাশে একজন রোগীকে খুঁজতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর পুরুষ ওয়ার্ডের একটি বেডে শুয়ে পড়েন। সঞ্জয় একথা দাবি করলেও তাঁর বয়ানের স্বপক্ষে কোনও সাক্ষী আদালতে পেশ করেননি তাঁর আইনজীবী। ফলে তাঁর দাবি মানেনি আদালত। শেষ অবধি তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক।