বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি করে ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি আর্থিক দুর্নীতি মামলারও তদন্ত করছে সিবিআই। সম্প্রতি এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে আশিস পাণ্ডেকে। তিনি আবার আরজি করের (RG Kar Case) প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের ঘোষের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সন্দীপের সঙ্গে তাঁর ‘সুসম্পর্কে’র কথা এখনও শোনা যায় আরজি করের অন্দরে।
কে এই আশিস পাণ্ডে (RG Kar Case)?
জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে এমবিবিএস পড়তে আরজি করে প্রবেশ করেন তিনি। ২০২২-২৩ সালে তাঁর ইন্টার্নশিপ হয়। এরপর ওই একই মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে হাউস স্টাফ ছিলেন তিনি। শোনা যায়, বিগত কয়েক বছরে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের (Sandip Ghosh) ‘খাস লোক’ হয়ে উঠেছিলেন এই আশিস। সন্দীপ জমানায় হাসপাতালের অন্দরে দুর্নীতির যে জাল ছড়িয়েছিল তাতে জড়িত ছিলেন এই আশিসও।
বছর তিনেক আগে আরজি করে টিএমসিপির (TMCP) ইউনিট তৈরি হয়। সেখানকার প্রেসিডেন্ট হন আশিস। বিগত কয়েক বছরে তাঁর ‘দাপট’ ব্যাপক বেড়েছিল বলে খবর। গত বছর যেমন ডাক্তারি পড়ুয়াদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল আরজি কর। তখন মাস খানেকের জন্য বদলি করা হয় সন্দীপকে। এরপর ফের আরজি করে ফিরতেই প্রতিবাদকারীদের ওপর ‘চড়াও’ হয়েছিলেন আশিস। শোনা যায়, ২০ জন পড়ুয়াকে হস্টেলের মধ্যে একটানা ‘নিল ডাউন’ করে রেখেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গেই তাঁর মুখ ফেল করিয়ে দেওয়ার শাসানিও শোনা যেত বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আবহে লক্ষ্মীলাভ! অ্যাকাউন্টে ঢুকবে বাড়তি ২৮,২০৮ টাকা? মালামাল হবেন এই সরকারি কর্মীরা
আশিসের একসময়কার অধ্যাপক তথা চিকিৎসক নীলাঞ্জন ঘোষ বলেন, সন্দীপ যখন আরজি করের (RG Kar Case) অধ্যক্ষ ছিলেন, তাঁর ঘরে সবাই ঢুকতে পারতেন না। তবে আশিসদের অবাধ যাতায়াত ছিল। সন্দীপের বিরুদ্ধে সরব হলে এই আশিসদের থ্রেট সিন্ডিকেটের মুখে পড়তে হতো বলে দাবি করেন তিনি। সন্দীপের নির্দেশ যারা কার্যকর করতেন, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন আশিস, অভিযোগ জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর।
এখানেই শেষ নয়! আরজি করের সর্বত্র অবাধ যাতায়াত থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে পার্টির আয়োজন, আশিস (Ashish Pandey) সবটাই খুল্লমখুল্লা করতেন বলে জানা যাচ্ছে। আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের অভিযোগ ওঠার পর অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়ারা আরজি করের অ্যানাটমি বিভাগের অড়িটোরিয়ামে জিবি বৈঠক ডেকেছিলেন বলে অভিযোগ। তখন এই আশিসের নেতৃত্বেই সন্দীপ বাহিনী তাঁদের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
এছাড়াও সন্দীপ-আশিসের ‘ঘনিষ্ঠতা’র আরও একাধিক নজির রয়েছে বলে খবর। ৯ আগস্ট যেমন সুদীপ্ত রায়ের একটা ফোন পাওয়া মাত্রই সন্দীপের পাশে দাঁড়াতে শিয়ালদহ থেকে আরজি কর (RG Kar Case) ছুটে গিয়েছিলেন আশিস। এবার তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রসঙ্গে তাঁকে জেরা করা হয়। সন্তোষজনক জবাব না মেলায় গ্রেফতার করে সিবিআই।