বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছরের আগস্ট মাসে কলকাতার আরজি কর (RG Kar) হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের নির্মম ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের পর মাঝে কেটে গিয়েছে ৮ মাস। দীর্ঘ টানপোড়েনের অবসান ঘটিয়ে এতদিন পর অবশেষে তিলোত্তমার ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পেলেন তাঁর পরিবার। বুধবার সোদপুর নাটাগরে নিহত তরুণী চিকিৎসকের বাড়ি গিয়ে ওই শংসাপত্র দিয়ে এসেছেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। জানা যাচ্ছে, এদিন তিনি ওই সার্টিফিকেট নির্যাতিতার বাবার হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন। দীর্ঘ ৮ মাস অপেক্ষা করার পর এদিন মেয়ের ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পেলেন তিলোত্তমার পরিবার।
৮ মাস পর মিলল আরজি কর (RG Kar) তিলোত্তমার ডেথ সার্টিফিকেট
গত বছরের ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর (RG Kar) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের চারতলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত দেহ। প্রথমে আত্মহত্যার ঘটনা বলে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও পরে সামনে আসে আসলে সত্যি। তরুণী চিকিৎসকের নির্মম ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের গা-শিউরে দেওয়া সেই কাহিনী বাংলাতে তো বটেই আলোড়ন ফেলে দেয় সারা পৃথিবীর বুকে।
আরজি কর (RG Kar) কান্ডের তদন্তে নেমে শুরুতেই কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল সঞ্জয় রায় নামে কলকাতা পুলিশের এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে। পরে আদালতের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে। কলকাতা পুলিশের মতই সিবিআই অফিসাররাও সঞ্জয় রায়কে দোষী বলে উল্লেখ করে চার্জশিটে। ইতিমধ্যেই কলকাতার শিয়ালদহ আদালতে দোষী সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা হয়ে গিয়েছে।
তিলোত্তমার পরিবার আদালতের এই নির্দেশে সন্তুষ্ট নন। একই সাথে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও। এখনও এই মামলা চলছে আদালতে। তবে এসবের মাঝে দীর্ঘ আট মাসেও নির্যাতিতার পরিবারের হাতে এসে পৌঁছায়নি তাঁদের মেয়ের ডেথ সার্টিফিকেট। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে আজ বুধবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নির্যাতিতা তরুণীর ওই ডেথ সার্টিফিকেট তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে ওই সার্টিফিকেট আপলোড করা হয়েছে ‘জন্ম মৃত্যু তথ্য’ পোর্টালে।
আরও পড়ুন: ‘দুষ্টুমির খেলা…!’ বিধানসভা থেকেই ফুঁসে উঠলেন মমতা
মেয়ের মৃত্যু শংসাপত্র পাওয়ার পর তিলোত্তমার বাবা জানিয়েছেন, ‘নারায়ণ স্বরূপ নিগম এসে মেয়ের ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে গিয়েছেন। বলেছেন পরে অন্য কপি দরকার হলে ব্যবস্থা করে দেবেন। বিকেলে লিংকও এসেছে। প্রয়োজনে সেটা থেকে কপি করে বের করে নেওয়া যাবে।’ একইসাথে এদিন তিনি জানালেন গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে ওই সার্টিফিকেট পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা।
উল্লেখ্য গতবছর আরজি কর হাসপাতালে সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল ওই হাসপাতালের মর্গেই। শ্মশান থেকে দাহ করার পর পরিবারের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হলেও, এতদিন ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি তাঁদের।