বিরাট ‘আয়োজন’! আর জি কর কাণ্ডের সঞ্জয়ের জন্য যা করছে পুলিশ… ফাঁস হতেই শোরগোল শুরু

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বারবার মুখ খোলাতেই কি বাড়ল ‘আদর’? গত ৯ অগস্ট আর জি কর (RG Kar) হাসপাতালে কর্মরত তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের (RG Kar Doctor Rape and Murder Case) ঘটনা ঘটে। তদন্তে নেমে সঞ্জয় রায় (Sanjay Ray) নামের এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করে সিবিআই। গত ১৪ অগস্ট আর জি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায়কে হেফাজতে নেয় সিবিআই। ২৩ অগাস্ট আর জি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়কে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত। তারপর থেকে জেলেই রয়েছে সঞ্জয়। মাঝে একাধিকবার প্রিজন ভ্যানে চেপে বাইরে এলেও মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে ছিলেন সঞ্জয়। তবে দিন কয়েক হল ধৃতের ‘ভিন্ন রুপ’ দেখেছে গোটা রাজ্য।

প্রথমে সরকার আর তারপর প্রাক্তন সিপি বিনীত গোয়েল। সপ্তাহ খানেকের ব্যবধান, দু’বার বোমা ফাটিয়েছেন আর জি কর (RG Kar) কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়। কিছুদিন আগের ঘটনা, আদালত থেকে প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ চিৎকার করে সঞ্জয় বলে, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট-সরকার সব জানে।”

রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সঞ্জয় বলেছিল, ‘এতদিন চুপচাপ ছিলাম। এতদিন কোনো কথা বলিনি। আমি রেপ বা খুন করিনি। আমাকে বলতে দেওয়া হয়নি সেখানেও। আমাকে নিচে নামিয়ে দিল। সরকারই আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমাকে সব জায়গায় ভয় দেখাচ্ছে যে না তুমি কিছু বলবে না। আমাদের ডিপার্টমেন্ট আমাকে ভয় দেখিয়ে এসব করেছে।’

আর গতকাল সরকার নয়, সরাসরি নাম তুলে বোমা ফাটায় সঞ্জয়। সোমবার শিয়ালদা কোর্ট চত্বর থেকে প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় জানলা থেকে চিৎকার করে সঞ্জয় বলে, সে নির্দোষ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। এমনকি তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে ক্যামেরার সামনে অভিযোগ তোলে সঞ্জয়।

এরপরই প্রাক্তন সিপির নাম ধরে চিৎকার সঞ্জয় বলে, ‘আমি নাম বলে দিচ্ছি বিনীত গোয়েল, ডিসি স্পেশাল সাজিস (ষড়যন্ত্র) করে আমাকে ফাঁসিয়েছে আর সরকারও ওদের সাপোর্ট করছে।’ কেন ফাঁসিয়েছে? ‘ওরা কেন ফাঁসিয়েছে ওরা বলতে পারবে।’ আদালত থেকে বেরিয়েই বিস্ফোরক সঞ্জয় রায়।

কোর্ট থেকে বেরিয়ে যে সময় ধৃত সঞ্জয় রায়কে গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, সেই সময়ই সে চিত্‍কার করে বলতে থাকে, ‘আমাকে বলতে দিচ্ছে না, আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। বড় বড় অফিসাররা ফাঁসিয়েছে।’ এরপরই প্রাক্তন সিপির নাম উঠে আসে তার মুখে। প্রসঙ্গত, গতকাল আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে চার্জ গঠন করা হয়। চার্জশিট পেশের ২৮ দিনের মাথায় ৩ ধারায় গঠন হয় চার্জ। সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম রয়েছে সঞ্জয় রায়ের।

আরও পড়ুন: ’১৪ নভেম্বর…’! হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হল না অর্জুনের! তোলপাড় করা নির্দেশ আদালতের

মঙ্গলবার বিচারপর্বের দ্বিতীয় দিনে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্সি সংশোধনগার শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হয় আর জি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে। তবে এদিন পাল্টে গেল গাড়ি। এদিন আর প্রিজন ভ্যানে নয়। অন্য একটি গাড়িতে করে আদালতে আনা হয় তাকে। কালো কাচ তোলা এসি গাড়িতে অভিযুক্তকে আনা হয় আদালতে। নিরাপত্তাজনতি কারণে প্রিজন ভ্যান এসকর্ট করেই আদালতে আনা হয় সঞ্জয়কে। তবে এদিন নিরাপত্তায় আরও কড়া জোর। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন।

RG Kar case accused Sanjay Roy allegedly cried in jail

তাহলে কি প্রাক্তন পুলিস কর্তাদের নাম নিতেই নিরাপত্তায় জোর? কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তুলছে তাহলে কি অভিযুক্তের ‘মুখবন্ধে’র জন্যই সক্রিয় পুলিশ? সেই কারণেই কি এই বদল? যদিও এই বিষয়ে পুলিস কর্তাদের ব্যাখা, হাইপ্রোফাইল মামলায় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ।

ad

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর