বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি কর কাণ্ডে (RG Kar Protest) তোলপাড় রাজ্য। গত ৯ অগস্ট আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে গোটা রাজ্য। দিকে দিকে প্রতিবাদ। সহকর্মীর নৃশংস মৃত্যুতে টানা কর্মবিরতিতে বাংলার জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor’s Protest)। নেতৃত্বে অনিকেত মাহাতো,কিঞ্জল নন্দ, রুমেলিকা কুমার, দেবাশিস হালদাররা। এদের সকলের মধ্যে বিশেষ নজর কেড়েছে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিসবাবু (Debasish Halder)। রোগা-ছিপছিপে চেহারা হলেও কণ্ঠে তেজ, সোজা-সাপ্টা ঝাঁঝাল বক্তা, তার সাহস, উদ্যমে শিহরিত সকলে। কে এই তরুণ ডাক্তার জানেন? তার আসল পরিচয় আপনাকে অবাক করবে।
হুগলির বলাগড়ের খামারগাছির বাসিন্দা দেবাশিস হালদার। বাড়িতে থাকেন মা ,বাবা আর পিসি। শুরুর দিকে একটি গুমটি দোকান চালাতেন তার বাবা। সেই দিয়েই স্বল্প রোজগারে চলত চার জনের সংসার। পরে পূর্ত দফতরের গ্রুপ-ডি পদে চাকরি পান দেবাশিসের বাবা ক্ষিতীশ হালদার। বর্তমানে তিনি অবসরপ্রাপ্ত।
ছোটবেলায় পিসির হাতেই বড় হওয়া দেবাশিসের। স্কুলজীবনেও তার হাতেখড়ি পিসি মীরার হাত ধরেই। প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করে কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন দেবাশিস। আগাগোড়াই তিনি বইপোকা। ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় গোটা রাজ্যের মধ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতেও বিরাট সাফল্য। ২০১১ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের রাজ্যের মধ্যে একাদশ স্থান অধিকার করে নজির গড়েন দেবাশিস হালদার।
একসময় দাদাগিরির সেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে নেন পুরষ্কারও জিতে নিয়েছেন এই ছাত্র। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর লক্ষ্য ছিল ডাক্তারির। অক্লান্ত পরিশ্রমে খুব স্বল্প সময়ে ডাক্তারির পরীক্ষা নিটেও আসে সাফল্য। প্রথমে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস কমপ্লিট করেন। বর্তমানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগে কর্মরত তিনি। তার সহধর্মিণীও একই পেশায়। জানা গিয়েছে ৬মাস হল বিয়ে সেরেছেন এই ডাক্তার। স্বামীর পাশাপাশি আর জি কর আন্দোলনে সহযোদ্ধা হয়েছেন তিনিও।
আরও পড়ুন: খুন করে ধামাচাপা দিতেই সঞ্জয়কে ডেকে করানো হয় ধর্ষণ? কার নির্দেশে হয়েছিল সব? বিস্ফোরক দাবি CBI-র
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকরে দেবাশিস হালদারের পরিবার জানিয়েছে, ছেলে আগে কখনও সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে আর জি কর ঘটনা তার মধ্যে সাড়া ফেলেছে। দিনের পর দিন যেভাবে রাজনৈতিক রঙ ছাড়াই রাস্তায় নেমে ঝড়-বৃষ্টি, তাপ উপেক্ষা করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচারের দাবিতে ছেলে লড়ে চলেছেন তাতে গর্বিত গোটা পরিবার।