বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছরের ৯ আগস্টের ভয়াবহ ঘটনা। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা আর জি কর কাণ্ডের (RG Kar Case)। ধৃত মূল অভিযুক্ত সিভিক সঞ্জয় রায়ের কী পরিণতি হয়, কি রায় দেয় আদালত সেদিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। অবশেষে দোষী সাব্যস্ত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। রায় দিলেন বিচারক অনির্বাণ দাস (Judge Anirban Das)। সাজা ঘোষণা সোমবার।
ধর্ষণ ও খুনের ধারায় দোষী সাব্যস্ত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন। এদিনও সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। তিনি আরও বলেন, ‘স্যার আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে। ধস্তাধস্তি হলে মালাটা ছিঁড়ে যেত, সেটা ছিঁড়ে নি। আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ওই সেমিনার রুমে আমার প্রবেশ করা সম্ভব নয়।আইপিএস অফিসাররা যা বলেছে তাই বলেছি। ‘ ১২ মিনিটের শুনানিতে কাতর আর্জি সঞ্জয়ের।
এদিন সঞ্জয় রায়কে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেন, ওই চিকিৎসকে গলা টিপে খুন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে আপনার বিরুদ্ধে। সমস্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আর জি কর ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় রায় ঘোষণা করল আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে। সোমাবর দুপুর সাড়ে ১২ টায় সাজা ঘোষণা করবে আদালত। ওই দিন সঞ্জয়কে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।
মূল ঘটনা:
গত ৯ আগস্ট, কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সি ডাক্তারি পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ার দিন নাইট শিফটে ছিলেন তরুণী চিকিৎসক। হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ যখন উদ্ধার করা হয়েছিল, তখন পরনের পোশাক অবিন্যস্ত অবস্থায় ছিল। সেমিনার হলে ছিল না কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা। তরুণী চিকিৎসকের দুই চোখ, মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। যৌনাঙ্গে ও গলায় ছিল ক্ষত। আঘাতের চিহ্ন ছিল মুখে, পায়ে, নখে, পেটে, হাতে, ঠোঁটে। চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণ করে খুন করার বিষয় ছিল স্পষ্ট।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল তরুণী চিকিৎসককে। ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সিবিআই এই সঞ্জয়কেই মূল অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই সঞ্জয় আজ দোষী সাব্যস্ত। তবে একা সঞ্জয়ই যুক্ত নয় বলে প্রথম থেকে দাবি নির্যাতিতার পরিবার সহ আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসদের। ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট সহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। পরবর্তীতে তদন্তকারী সংস্থা এই নিয়ে কোনো চার্জশিট দেয় কিনা সেদিকে নজর থাকবে।