বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় বাম বিরোধী, অথবা বামেদের সমর্থনে পোস্ট না করলেই ইউজারদের তীব্র কটাক্ষের মুখে পরতে হয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধীতা না করলে অথবা বিজেপির সমর্থনে কোন কিছু বললেই ব্যাস আর রক্ষে নেই! তখন বামেদের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় পেজ, এবং বামেদের হয়ে গলা ফাটানো সোশ্যাল মিডিয়ায় ইউজাররা একেবারে নিন্দায় সরব হয়ে ওঠে। আর সেটা যদি কোন সেলিব্রেটি হয়, তাহলে তো কোন কথাই নেই।
সম্প্রতি বাংলার এক বিখ্যাত বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের অ্যাঙ্কর বিজেপির সমালোচনা না করায় বামেদের রোষের মুখে পড়লেন। সাংবাদিক মৌপিয়া নন্দী বরাবরই বিজেপির সমালোচক হিসেবে পরিচিত, এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে ওনাকে অনেক পোস্ট করতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার তিনি বিজপিকে কটাক্ষ না করায় রোষের মুখে পড়েছেন।
সম্প্রতি তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সমালোচনা না করে, ওনার সমর্থন করেছিলেন। উনি পোস্টে এও উল্লেখ করে দিয়েছিলেন যে, এর মানে এই না যে উনি দিলীপ ঘোষের ফ্যান অথবা অনুগামী হয়ে গেছেন। উনি লিখেছিলেন, ‘যেমন ইনকিলাব জিন্দাবাদ বললে বিপ্লব মরে যায় না, তেমনই স্বাধীনতা অমর রহে বললে, স্বাধীন ভারত অমর হয়ে যায় না।”
উনি আরও লেখেন, ‘মমতা ব্যানার্জি বা দিলীপ ঘোষের মত নামী প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি না থাকা বা তুখোড় ইংরেজি বলতে না পারা কোনো নেতা বা নেত্রী কিছু বললেই তা নিয়ে খিল্লি করার যে প্রবণতা তার মধ্যে একটা অবাঞ্ছিত এলিটিজম রয়েছে বলে আমি মনে করি।” এমনকি তিনি শেষে এটাও লিখে দেন যে, এই মতামত একদমই ওনার ব্যাক্তিগত।
এরপর থেকে বিভিন্ন বাম পেজ এবং ফেসবুক গ্রুপে ওনাকে নিয়ে খিল্লি শুরু হয়ে যায়। বাদকুল্লা বামপন্থী সমর্থক বলে একটি পেজে ওনার মন্তব্যকে কাউন্টার করে লেখে, ওনার মধ্যে মহিলা সুলভ বিশৃঙ্খলা লুকিয়ে আছে। তখনই বিজেপির নেত্রী তথা টলিউড অভিনেত্রী রিমঝিম মিত্র (Rimjhim Mitra) বাম পেজের ওই মন্তব্যকে নিয়ে একটি পোস্ট দেন। উনি লেখেন, ‘” মহিলাসুলভ বিশৃঙ্খলা ” মানে? নিশ্চয় খুব প্রগ্রেসিভ গভীর কোনও মানে আছে। ফেমিনিস্ট বাম দাদা দিদিদের উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে 🤗”
যদিও বাদ যান নি মৌপিয়াও। উনি বামেদের খিল্লি নিয়ে লেখেন, যখন কেউ যুক্তিতে হেরে যায়, তখন তাঁরা মিম বানানো শুরু করে। ওনাকে নিয়ে চারিদিকে মিম বানানোর পর উনি আরেকটি পোস্ট করে লেখেন, ‘সি পি আই এমের একটি গ্রুপে আমায় নিয়ে একটি meme দেখে অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে ফোন মেসেজ করছেন। কোনো চিন্তা নেই। বহাল তবিয়তে বেঁচে আছি। গতকাল আমার ‘অমর রহে’ পোস্টে কিছু বামপন্থী একমত হননি তাই এই প্রতিক্রিয়া। আশা করি তাঁদের ইনকিলাব মৌপিয়া নন্দীকে নিয়ে meme তৈরির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আরো মহান বিষয়ের প্রতি ফোকাস করবে। আর meme নিয়ে আমার আপত্তি তো নেই ই বরং বেশ মজাই পাচ্ছি। চালিয়ে যাও / যান 😊😊 Meme টি শেয়ার করে ফ্রিতে পাবলিসিটি দেওয়ার উদারতা দেখাতে পারলাম না 😉”
স্বভাবতই বামাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির বিরোধিতা করাই প্রধান উদ্দেশ্য থাকে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ যদি বিশেষ করে কোন সেলিব্রেটি বিজেপির সমর্থনে কিছু লিখে ফেলেন, তাহলেই তাঁদের তুলোধোনা শুরু করে বাম আইটি সেল। বাক স্বাধীনতার জন্য আওয়াজ তোলা বামেরা, কখনোই যে তাঁদের বিরুদ্ধে অথবা বিজেপির সমর্থনে কোন কথা মেনে নিতে পারেনা, সেটি বর্তমানে ঘটে যাওয়া দেখে স্পষ্ট প্রমাণ হয়।