প্রেমিকার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ! রিঙ্কু-পুত্রের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি বান্ধবীর, ঘনাচ্ছে রহস্য

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মঙ্গলবার আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের (Rinku Majumdar) ছেলে প্রীতমের। বিয়ের মাসখানেকের মধ্যেই সন্তান হারানোর যন্ত্রণায় ভেঙে পড়েছেন দিলীপ-পত্নী। ‘পুত্রশোকে’র কথা শোনা গিয়েছে বিজেপি (BJP) নেতার মুখেও। এই আবহে প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয়ের প্রেমিকাকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন রিঙ্কুর বান্ধবী ঝুমা ঘোষ। প্রীতমের মৃত্যুর পরেই সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। এবার একটি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আরও বেশ কিছু মন্তব্য করলেন।

রিঙ্কু-পুত্রের (Rinku Majumdar) বান্ধবীকে নিয়ে কী বললেন ঝুমা?

দিলীপ পত্নীর আগের পক্ষের ছেলে প্রীতম। সংবাদমাধ্যমের কাছে মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। তবে প্রীতমের মৃত্যুর পরেই নানান মহল থেকে দিলীপ-রিঙ্কুর বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। মায়ের বিয়ের জন্য ছেলের মৃত্যু নয় তো? প্রশ্ন তোলেন অনেকে। সেই দাবি খারিজ করে ঝুমা বলেন, ‘সেটাই যদি সত্যি হতো, তাহলে ছেলেটি বাইট দিয়ে বলতো না, মায়ের এই সিদ্ধান্তে আমি খুব খুশি। রিঙ্কু কখনওই ছেলেকে না জানিয়ে জিনিসটি করেনি। বিয়ে ও ছেলের মৃত্যু হঠাৎ করে হওয়ায় এই কথাগুলো উঠছে। আজ ছেলে বেঁচে থাকলে এই কথাগুলো আসত না’।

এরপরেই প্রীতমের প্রেমিকাকে নিয়ে মুখ খোলেন ঝুমা (Jhuma Ghosh)। দাবি করেন, বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই দু’জনের মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। মেয়েটি রিঙ্কু পুত্রের ওপর ‘মানসিক অত্যাচার’ করতেন বলেও দাবি করেন তিনি। ঝুমা বলেন, ‘যে মেয়েটির সঙ্গে লিভ ইন করতো, তাঁর সঙ্গে কয়েকদিন ধরে গণ্ডগোল হচ্ছিল। মেয়েটিকে সে কোনও ভাবে ফ্ল্যাটে এন্টারটেইন করতে দিচ্ছিল না। মেয়েটি সেটা শুনছিল না। এরপর প্রীতম রিঙ্কুকে বলে, মা ওকে আসতে বারণ করো। এরপর দিলীপবাবুকেও বলে। কয়েকদিন হল একথা বলেছে’।

আরও পড়ুনঃ রাষ্ট্রপতির প্রশ্নের মুখে সুপ্রিম কোর্ট! হঠাৎ কী হল? তোলপাড় দেশ

রিঙ্কুর (Rinku Majumdar) বান্ধবী জানান, ছেলের কথা মতো মেয়েটিকে ফ্ল্যাটে যেতে নিষেধ করে দেন দিলীপ পত্নী। তারপরেও আগের দিন রাতে কীভাবে মেয়েটি প্রীতমের ফ্ল্যাটে এল? প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ঝুমা জানান, বিগত দু’বছর ধরে প্রীতমের সঙ্গে মেয়েটি লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। কয়েকদিন আগে দু’জনের মধ্যে সমস্যার সূত্রপাত হয় বলে দাবি করেন তিনি। ‘মেয়েটি ভীষণ মানসিক অত্যাচার করছিল। সেই অত্যাচারের মাত্রা এতটাই হয়ে গিয়েছিল যে ছেলেটি বলে, তুমি আমার ফ্ল্যাটে আসবে না। মেয়েটি সেকথা শুনছিল না। এরপর রিঙ্কুকে বলা হয়। রিঙ্কু বলার পর মেয়েটা কয়েকদিন আসেনি। কিন্তু শেষ দিন আবার এসেছিল। বারণ করার পরেও হঠাৎ করে ও কেন এল? কী হয়েছে আমরা জানি না। কিন্তু পুলিশের কাছে এই বিষয়ে আবেদন করব, আপনারা দয়া করে তদন্ত করুন। কেন আগের রাতে ফ্ল্যাটে এল? সঙ্গে আরেকটি ছেলে বন্ধুও এসেছিল। সেও বা কেন এল?’ প্রশ্ন তোলেন রিঙ্কুর বান্ধবী

এখানেই না থেমে ঝুমা বলেন, নিমতলা ঘাট থেকে দিলীপবাবুর বাড়ি যাওয়ার পরেই ক্রমাগত প্রীতমের প্রেমিকা ফোন করতে থাকে। সে ল্যাপটপ নিতে চায় বলে রিঙ্কুকে জানায়, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

এই অভিনেত্রী-সমাজসেবীর কথায়, ‘নিমতলা ঘাট থেকে দিলীপবাবুর বাড়িতে যাওয়ার পরেই মেয়েটির ফোন আসতে শুরু করে। বলতে থাকে, আমি ল্যাপটপ নেব। আমরা গোপন সূত্র মারফৎ আগেই জেনেছিলাম, মেয়েটি ওর বাবাকে নিয়ে ল্যাপটপ নিতে আসছে। এটা জানার পরেই রিঙ্কু মেয়েটিকে ফোন করে বলে, তুমি এখন দরজা খুলবে না। ল্যাপটপ এখন নেওয়া যাবে না। বাকি কথা কাল হবে। এটা বলার পরেও ও ফোন করে বলে, আমার ল্যাপটপটা ভীষণ দরকার। আমি নিতাম না, কিন্তু নিউ টাউন থানার আইসি আমায় ফোন করে বলেন, তোমার তো অফিস আছে, ল্যাপটপটা বের করে নাও। নিউ টাউন থানার আইসি সম্বন্ধে ওর দাবি কতটা সত্য কতটা মিথ্যা জানি না। পুলিশ নিজে থেকে কেন ওই মহিলাকে বলবে? এটা একটা প্রশ্ন। আর সেদিন রাতে ও কেন বারবার ল্যাপটপ নিয়ে চলে যেতে চাইছিল? এটাও একটা প্রশ্ন’।

rinku majumdar son

নিউ টাউন থানার (New Town Police Station) আইসি সত্যিই মেয়েটিকে ল্যাপটপ নিতে বলেছিলেন কিনা সেই বিষয়ে কি থানার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়েছিল? জবাবে ঝুমা বলেন, ‘না। কাল অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। আজ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায়’।

রিঙ্কুর বান্ধবী জানান, আপাতত প্রীতমের ফ্ল্যাটে কাউকে ঢুকতে বারণ করা হয়েছে এবং ফ্ল্যাটের চাবিও কাউকে দিতে নিষেধ করা হয়েছে।

প্রীতম কোনও নেশা করতেন কিনা জিজ্ঞেস করায় ঝুমা জানান, অল্প নেশা করতেন রিঙ্কু পুত্র। সেই সঙ্গেই শারীরিক কিছু সমস্যাও ছিল। নিউরোর সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখানো হয়েছিল, ওষুধ খেতেন তিনি। তবে রিঙ্কু পুত্রের শারীরিক অবস্থা এমন ছিল না যে এভাবে আকস্মিক মৃত্যু হবে, দাবি করেন এই অভিনেত্রী-সমাজসেবী।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই রিঙ্কু (Rinku Majumdar) পুত্রের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেখানে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ অ্যাকিউট হেমরেজিক প্যানক্রিয়াটাইটিস। সেই সঙ্গেই তাঁর হৃদযন্ত্র, কিডনি ও লিভারের আকার স্বাভাবিকের থেকে বড় ছিল। রক্তচাপের সমস্যা হলে এই ধরণের লক্ষণ দেখা যায়। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যা অথবা কোনও রকম ‘ফাউল প্লে’র উল্লেখ নেই।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X