বাংলাহান্ট ডেস্ক: এতদিন মা বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে (Mata Vaishnodevi Temple) পৌঁছতে হলে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার ট্রেকিং করতে হত। অনেকেই এতটা রাস্তা হেঁটে যেতে পারতেন না। বিশেষত বয়স্ক অথবা অসুস্থ মানুষজন। তাহলে কি তাঁদের ঠাকুর দর্শনের ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যেত? এ নিয়ে সরকারি স্তরেও যথেষ্ট আলোচনা শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা বার বার দেখছিলেন কী ভাবে এতটা রাস্তার দূরত্ব কমিয়ে আনা যায়। কী ভাবে বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষের সুবিধা করে দেওয়া যায়।
অবশেষে দীর্ঘ আলোচনার পর ঠিক করা হয় যে এই রুটে রোপওয়ে (Ropeway) চালু করা হবে। অবশেষে এই রোপওয়ে তৈরির কাজ পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়িত হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হতে চলেছে। মা বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে রোপওয়ে পরিষেবা চালু হয়ে গেলে পুরো যাত্রার ভোল বদলে যাবে। তীর্থযাত্রীদের জন্য বিরাট সুখবর আসবে। শুধু তাই নয়, স্বস্তির খবরও বটে।
রোপওয়ে হয়ে গেলে বৈষ্ণোদেবী পৌঁছনো আরও অনেক সহজ হয়ে যাবে। আগে যে দুর্গম পথে যেতে সময় লাগত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা, সেই সময়েই কমে হবে মাত্র ৬ মিনিট। বৈষ্ণোদেবী দর্শনে প্রতি বছরই প্রচুর পরিমাণে তীর্থযাত্রী আসেন। ২০২২ সালেই ৯১ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu & Kashmir) এই তীর্থস্থানে। অধিকাংশই ১২ কিমি দীর্ঘ পথ ট্রেক করে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ২০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত মন্দিরে গিয়েছিলেন।
এই মন্দিরটি ত্রিকূট পর্বতে অবস্থিত। এতদিন এই দুর্গম রাস্তা ধরেই আসতেন তীর্থযাত্রীরা। তবে এ বার এই দুর্গম পথও হবে সুগম। এই রোপওয়ে নির্মাণের জন্য নিলাম ডেকেছে ‘রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক সার্ভিস লিমিটেড’ বা RITES। এই রোপওয়েটি হবে ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে আগামী ৩ বছরের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে এই রোপওয়েটি। প্রায় ২৫০ কোটি টাকা খরচ পড়বে এটি নির্মাণে।
এটির যাত্রা শুরু হবে কাটরা বেস ক্যাম্পের তারাকোট থেকে। গন্ডোলা কেবল কার সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে পৌঁছে দেবে মা বৈষ্ণোদেবীর চরণে। উল্লেখ্য, দু’বছর আগে আরও একটি রোপওয়ে পরিষেবা শুরু হয়েছে। সেটি ত্রিকূট পর্বতে বৈষ্ণোদেবী মন্দির থেকে ভৈরো মন্দির পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রসঙ্গত, বর্তমানে মা বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে যাওয়া যায় দু’ভাবে।
একটি রাস্তা হল চপার বা হেলিকপ্টারে উড়ে। যেটি খুবই ব্যয়বহুল একটি বিকল্প। সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে বললেই চলে। খুবই আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল না হলে প্রথম বিকল্পটি বেছে নেওয়া কঠিন। যদিও এতে খুবই কম সময়ে মন্দিরে পৌঁছে যাওয়া যায়। অন্য বিকল্পটি হল ১২ কিলোমিটার রাস্তা ট্রেক করে। এই পথে প্রচণ্ড পরিশ্রম হয়। কিন্তু রোপওয়েটি চালু হলে সাধারণ মানুষের লাভ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। কারণ এতে সময়, শ্রম ও অর্থ- তিনটি জিনিসই বাঁচবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।