বাংলাহান্ট ডেস্ক : সুন্দরবন অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন যন্ত্রণার কাহিনী কারুর অজানা নয়। এই সমস্ত অঞ্চলের অধিকাংশ পরিবারই মৎস্যজীবী। মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য জলজ প্রাণী শিকার করেই পেট জলে তাদের। পেটের দায় প্রতিদিন বহু মানুষ সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ও মাঝ নদীতে যান শিকারের আশায়। ঠিক তেমনই কিছু রোজগারের আশায় স্বামী-স্ত্রী মিলে নৌকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু আর কিছুক্ষণ পরেই যে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ানক বিপদ তা তারা ভাবতেও পারেনি!
সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের গোলভক্সা এলাকার নদীখাঁড়িতে কাঁকড়া শিকারের উদ্দেশ্যে নৌকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন শিবপদ সরকার ও তাঁর স্ত্রী রীণা সরকার। সরকার দম্পতি গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন উপকুল থানার অন্তর্গত লাহিড়ীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরী এলাকার বাসিন্দা। বাড়িতে রয়েছে তিন পুত্র ও এক পুত্রবধূ। শিবপদ বাবু ছিলেন এই দিনা আনা দিন খাওয়া পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। সুন্দরবনের নদীতে কাঁকড়া শিকার করে অন্ন সংস্থান করেন তিনি।
কাঁকড়া ধরার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার ভোরে স্ত্রী ও প্রতিবেশী শশাঙ্ক মন্ডল কে নিয়ে নৌকা নিয়ে রওনা দেন নদীখাঁড়িতে। নদীর চরের কাছে নৌকা বেঁধে কাঁকড়া ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শিবপদ ও তার স্ত্রী। এমন সময় হঠাৎই একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নৌকার উপর উঠে এসে শিবপদর ঘাড়ের উপর কামড় বসায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে টানতে টানতে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায় বাঘ। অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবেশী শশাঙ্ক ডালপালা এনে বাঘকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। চোখের সামনে স্বামীর এই পরিণতি দেখে রীতিমত বাক্যহারা হয়ে পড়েন স্ত্রী রীণা দেবী। এরপর প্রতিবেশী শশাঙ্ক মন্ডল তার নৌকা করে রীণা সরকারকে গ্রামে ফিরিয়ে আনেন। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকা জুড়ে।