বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সমগ্র দেশ জুড়ে বর্তমানে মন্দির ও মসজিদ নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষত জ্ঞানবাপী মসজিদ ইস্যু সম্প্রতি দেশের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তরপ্রদেশের জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ পাওয়ার ঘটনায় উত্তাল রয়েছে গোটা দেশ আর এর মাঝেই যখন কুতুবমিনার কিংবা তাজমহলের রহস্য উন্মোচনের দাবি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ছে, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সকল বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ডাক দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে জ্ঞানবাপী মসজিদ পূর্বে হিন্দু দেব-দেবীদের মন্দির ছিল এবং বর্তমানেও যে সেখানে এসকলের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যাবে, সেই সম্পর্কে দাবি জানিয়ে আদালতে মামলা করে হিন্দু সংগঠনগুলি। এর পরেই উক্ত স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে অবশেষে একটি কুয়োর ভিতর থেকে শিবলিঙ্গের হদিশ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে ওঠে এবং মুহুর্তের মধ্যেই এই ঘটনার রেশ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে তাজমহল, কুতুব মিনার থেকে একাধিক ধর্মীয় স্থানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক জন্ম নেয় আর এসকল প্রসঙ্গ মাঝে যখন ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে পরিস্থিতি, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে উল্টো সুর দেখা গেল আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের গলায়।
এদিন নাগপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করে মোহন ভাগবত বলেন, “দেশে এমন কিছু জায়গায় রয়েছে, যেখানে আমাদের বিশেষ ভক্তি জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু তা বলে প্রতিদিন নিত্য নতুন ঘটনা খুঁজে বার করার কোন প্রয়োজন নেই। এগুলো বিতর্ক আরো বাড়িয়ে তোলে। জ্ঞানবাপী মসজিদ-এর ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে যে ভক্তি কাজ করেছে তা অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই। কিন্তু সেই কারণে দেশের অন্যান্য মসজিদ গুলিতে শিবলিঙ্গ খুঁজতে হবে, তার কোনো মানে হয় না।”
এছাড়াও তিনি বলেন, “জ্ঞানবাপী মসজিদে সম্প্রতি শিবলিঙ্গ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে এই নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু তা বলে আমরা কখনওই ইতিহাসকে পুরোপুরিভাবে বদলে দিতে পারিনা। বর্তমান যুগে হিন্দু কিংবা মুসলমানরা এই সকল জিনিস তৈরি করেনি। এসব ঘটনায় ঘটেছিল অতীতে মুসলিমদের দ্বারা আমাদের দেশকে আক্রমণ করার সময়কালে। ফলে প্রতিটি মসজিদে নতুন করে শিবলিঙ্গ খোঁজার কোন মানে হয় না। তাছাড়া হিন্দু এবং মুসলিমদের পূজার্চনা ভিন্ন ধরনের হলেও এটা মনে রাখতে হবে যে, মুসলিমদের পূর্বপুরুষেরা আমাদের ঋষি-মুনিদেরই বংশধর ছিলেন।”