বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, বাংলায় তৃণমূলকে শুধুমাত্র বিজেপিই টক্কর দিতে পারবে। গত ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিজেপি কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্বরাস্ত্রমন্ত্রী নিজেই দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। বঙ্গ বিজেপির নেতারা রাজ্যের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরে বেরাচ্ছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় আর রাজ্য নেতারা নির্বাচনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু গ্রাউন্ড লেভেলে যিনি বিজেপিকে মজবুত করছেন, সেই ব্যক্তিকে খুব কম মানুষই চেনে।
যেই বাংলায় বিজেপি একসময় নিজেদের অস্তিত্বের জন্য সংঘর্ষ করত, আজ সেখানেই জয়ের দাবি করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তার সাথা সাথে বিজেপির এই সাফল্যকে সঙ্ঘের প্রচারক তথা বিজেপির নেতা শিবপ্রকাশের পরিশ্রমের ফলও বলা যেতে পারে। বিজেপিতে রাষ্ট্রীয় সহসংগঠন মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো শিব প্রকাশ বিগত কয়েক বছর ধরে চুপচাপ বাংলায় কাজ করে চলেছেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের তরফ থেকে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর ওনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৪ সালেই বিজেপিতে অফিসিয়ালি যোগ দেব শিব প্রকাশ। প্রথমে ওনাকে উড়িষ্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, এরপর বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ওনাকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যে আসার পর কয়েক মাসের মধ্যেই ওনাকে বাংলার সংগঠনের প্রধান বানানো হয়।
উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা শিব প্রকাশ কর্মঠ আর জেদি ধরণের মানুষ। ওনার কঠোর পরিশ্রমের অনুমান এটা দেখেও করা যায় যে তিনি রাজ্যে দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বাংলাও শিখে নিয়েছেন, যা ওনাকে উপকৃতও করছে। গ্রামে গঞ্জে থাকা সাধারণের থেকে অতি সাধারণ মানুষের কাছে বিজেপি নীতি আদর্শ পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। তিনি নিজেই বাংলার গ্রামে গঞ্জে ঘুরে ঘুরে মানুষকে বোঝাচ্ছেন। ১৯৮৬ সালে সঙ্ঘের প্রচারকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন শিব প্রকাশ। এরপর থেকে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে আসার পর বুথ লেভেলে কাজ করা শুরু করে শিব প্রকাশ। গ্রামে গঞ্জে কর্মী তৈরি করেন তিনি। ৭৮ হাজারের বেশি বুথে দলের কমিটি গঠন করেন। আর সেই পরিণাম ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির অভূতপূর্ব সাফল্যে ধরা পড়ে। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ইতিহাস তৈরি করে বিজেপি এরাজ্যে ১৮ টি আসনে জয়লাভ করেছিল। বিজেপি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও এরকমই কিছু ইতিহাস বানাতে চাওছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২১১ টি আসনে জয়লাভ করেছিল। বিজেপি মাত্র ৩ টি আসন পেয়েছিল। সেই ৩ আসন পাওয়া বিজেপিই এখন রাজ্যে ক্ষমতায় আসার সবথেকে বড় দাবিবার হতে চলেছে।