বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিপিএমের সর্বভারতীয় মহিলা নেত্রী বৃন্দা কারাট (Brinda Karat)। সম্প্রতি সমাজের নারীদের ওপর ঘটে চলা হিংসা নিয়ে একটি বই লিখেছেন তিনি। যার নাম, ‘হিন্দুত্বের হিংসার মুখে নারী’। সোমবার হুগলির ডানকুনিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন থেকে বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছেন সেকুলার পন্থি এই বর্ষিয়ান মহিলা নেত্রী। তাঁর লেখা এই বইটি বাংলায় তর্জমা করেছেন মধুরিমা দত্ত। জানা যাচ্ছে, ন্যাশনাল বুক এজেন্সি (এনবিএ) থেকে বইটি পাওয়া যাবে।
বৃন্দা কারাতের ‘হিন্দু বিরোধী’ বই দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh)
সিপিএমের ফেসবুক পেজ থেকে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সদ্য প্রকাশিত বই হাতে বৃন্দাদেবী এবং পাশেই হাসিমুখে বসে রয়েছেন তাঁর স্বামী তথা বামনেতা প্রকাশ কারাট। এই পোস্ট ভাইরাল হতেই বৃন্দা কারাটের লেখা হিন্দু বিরোধী বইয়ের নাম দেখে তাঁকে তুলোধোনা করেছেন নেটিজেনদের একাংশ। এবার এই বিষয়ে সরব হয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh) এবং মানব গুহ’রা।
বৃন্দা কারাটের বই প্রকাশের ছবি সমেত একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। সেখানে তিনি হিন্দু বিরোধী বৃন্দাদেবীর উদ্দেশ্যে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। পোস্টের শুরুতেই রুদ্রনীল একেবারে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন অতীতে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হওয়ার পরেও কীভাবে নিজেদের ‘সেকুলারত্ব’ প্রমাণ করতে মুখে কুলুপ এঁটে থেকেছেন সিপিএম নেতারা।
ফেসবুক পোস্টে প্রকাশ্যে বৃন্দা কারাটকে আক্রমণ শানিয়ে রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) লিখেছেন,’আপনি ও আপনার সেকুলার ছাপ নেতারা হিন্দু ধর্মে জন্মেছেন বলেই ভোটের লোভে নিজের ধর্মকে ছোট করতে বই ছাপতে পারছেন। তবে,যে ধর্মের ভোট পেতে এসব করছেন তাদের ডিকশেনারিতে আপনারাও কিন্তু “কাফের” ছাপ! আর কাফেরদের জন্য কি নিদান ওদের,সেটাও বুঝে নিন।’ সবশেষে বৃন্দাদেবীর উদ্দেশ্যে রুদ্রনীলের বার্তা, ‘ভাল থাকবেন কমরেড হিন্দু বৃন্দাদেবী। ঈশ্বর,.. থুড়ি লেনিন আপনার মঙ্গল করুন। তিনি নিশ্চই আপনার বইটি কিনে পড়বেন।’
ফেসবুক পোস্টে বৃন্দা কারাটের হিন্দু বিরোধিতার তীব্র সমালোচনা করে রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) লিখেছেন, ‘সিপিএম কেন সর্বত্র শূণ্যের নেশায় পাঠকরাই বুঝে নিন।বৃন্দা কারাতের লেখা এই বই উপসর্গ মাত্র, হিন্দু বিরোধিতার ক্রনিক অসুখ এনাদের DNA তে!’ এরপরেই উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি টেনে এনেছেন, সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ। রুদ্রনীলের কথায়,’সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য কেন নিজেদের “সেকুলারত্ব” প্রমাণ করতে ধর্মতলায় প্রকাশ্যে শুধুমাত্র গরুর মাংস খেয়েছিলেন মিলিয়ে নিন। শুয়োরের মাংস খেলেন না কেন কমরেড? কেন সুদূর প্যালেস্তাইনে মুসলমানরা আক্রান্ত হলে কলকাতায় সিপিএম কেঁদে মিছিল করে, কিন্তু বাংলাদেশে বা কোথাও হিন্দু নিধন ও ধর্মান্তকরণ হলে পশ্চিমবঙ্গে এরা কেন চুপ থাকেন মিলিয়ে নিন। ৫০ কোটির মহাকুম্ভের আবেগ-জনপ্রিয়তায় জ্বলেপুড়ে, খুঁতধরা নানান সমালোচনায় সিপিএম কেন ব্যাস্ত বুঝে নিন।’
সিপিএম নেতাদের হিন্দু বিরোধী মনোভাবের সমালোচনা করে রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) এদিন লিখেছেন, ‘সারা পৃথিবীতে যে ধর্ম দেবী হিসাবে নারীদের পুজো করে,যে জীবনচর্চায় পুরুষের সাথে নারীর সমসম্মানে বিচ্যুতি হলে আওয়াজ ওঠে, বেছে বেছে কাদের ইচ্ছাপূরণে হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধে এই বই প্রকাশ তা সবাই জেনে গেছে এটা আপনিও বুঝে নিন!’
বৃন্দা কারাটের এই হিন্দু বিরোধী বই দেখা মাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মানব গুহও। ওই বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের ছবি দিয়ে দীর্ঘ পোস্টের একেবারে শুরুতেই চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি প্রশ্ন করেছেন, ‘কতটা নিচে নামলে সিপিএম হওয়া যায়? কতটা নোংরামি করলে সিপিএম নেতা নেত্রী হওয়া যায়? হিন্দু ধর্মকে কতটা ছোট করলে, সিপিএম নেতা নেত্রী হওয়া যায়? হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে কতটা প্রোপাগান্ডা ছড়ালে, সিপিএম নেতা নেত্রী হওয়া যায়?’
আরও পড়ুন: পিক আ্যান্ড চুজ পদ্ধতি চলছে? এবার রিপোর্ট তলব করল ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট, কোন মামলায়?
সরাসরি বৃন্দা কারাটের নাম নিয়ে এরপর লিখেছেন, ‘বৃন্দা কারাট বই লিখেছেন, নাম, “হিন্দুত্বের হিংসার মুখে নারী”, বাংলায় অনুবাদে এটাই বইয়ের নাম। অরিজিন্যাল বইটি ইংরাজিতে লেখা, নাম, Hindutva and Violence Against Women। এখানেই শেষ নয়, হিন্দু ধর্ম নিয়ে যা খুশি তাই করার জন্য ক্ষোভ উগরে দিয়ে আরও লিখেছেন, ‘কত বড় আস্পর্ধা এই সিপিএম নেত্রীর। কারণ হিন্দুরা ঘুমিয়ে আছে আর বেসিক্যালি হিন্দুরা কুম্ভ ডুব দিতে পারে, তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালতে পারে, আর তারাপীঠ গিয়ে মা মা করে চিৎকার করতে পারে। দুদিন রাজ্য অচল করে দেবার ক্ষমতা নেই, যেটা অন্য ধর্মে আছে। তাই হিন্দু ধর্ম ছাড়া বাকি ধর্মকে নিয়ে ইতরামি করার সাহস কারোর নেই।’
বৃন্দা কারাটকে চরম কটাক্ষের সুরে তিনি লিখেছেন, ‘বলি ও বৃন্দা মাসি, একটা বই লেখ না, “মুসলিম মৌলবাদীর হিংসার মুখে নারী।”‘ মানব গুহর চ্যালেঞ্জ সেই ধক নেই এই প্রবীণ সিপিএম নেত্রীর। কারণ এমন বই লিখেলে নাকি কারাট পরিবারের বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই মানব গুহর কথায়, ‘হিন্দুরা সহজ মাটি, যা খুশি লেখা যায়। কিন্তু এই কারাট পরিবার কেরালা ছাড়া সিপিএমকে শূন্য করে ফেলেছে। এইরকম হিন্দু বিরোধী মনোভাব থাকলে, ভারত থেকে সিপিএম পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’ সবশেষে তীব্র ধিক্কার জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এই রকম নোংরা প্রোপাগ্যান্ডা ছড়ানোর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করছি। ছিঃ সিপিএম ছিঃ…ধিক সিপিএম ধিক….নোংরা সিপিএম নিপাত যাক…।’
‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যের পর তীব্র কটাক্ষ! এবার মমতার সন্দেহ ‘১৪৪ বছর’ পর মহাকুম্ভ নিয়ে